সভা ও সমিতি
সভা ও সমিতি
'সভা' ও 'সমিতি' দুটি সামাজিক সংস্থার নাম। অনেকের মতে ঋক বৈদিক যুগে এই দুই সংস্থা বা
প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। এই দুই সংস্থা ঋক বৈদিক যুগে রাজার শাসনকার্যে সাহায্য করত।
প্রজাপতি ব্রহ্মার দুই কন্যা সভা ও সমিতির নাম অনুসারে এই দুটি সংস্থা গড়ে ওঠে।
সভাঃ
সভা একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এটি সমাজের বয়স্ক
ব্যক্তিদের দিয়ে গঠিত। এতে মহিলারা যোগ দিতে পারত না। এই প্রতিষ্ঠানের
সহযোগিতায় রাজা শাসন কার্যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতো। আবার অনেকে মনে করে এই সভায় অভিজাতরা প্রাধান্য পেত। তারা সেখানে অবসর সময় কাটানোর জন্য তাস-পাশা খেলত, সামাজিক
উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলেও পরবর্তীকালে
তাদের ক্ষমতা শুধু বিচার বিভাগের মধ্যে গন্ডিবদ্ধ হয়ে যায়।
সমিতিঃ
সমিতি, সভার মতোই একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এতে সভার মতো শুধু অভিজাত বা বয়স্করাই প্রাধান্য পায় না, এতে গোষ্ঠীর সকল মানুষ স্বাধীনভাবে যোগ দিতে পারতো। এই প্রতিষ্ঠানের আর একটি বিশেষত্ব
হল, এখানে সমস্ত স্বাধীন মানুষের সঙ্গে রাজাকে উপস্থিত থাকতে হতো। সর্বসম্মতিক্রমে
রাজা তার রাজকার্যের সিদ্ধান্ত নিত।
সভা ও সমিতির
সাদৃশ্যঃ
সভা ও সমিতি দুটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সমাজের উন্নয়নে রাজার শাসনকার্যে
সাহায্যের জন্য গঠিত হয়।
সভা ও সমিতির
মধ্যে পার্থক্যঃ
সভায় অভিজাত ও বয়স্করা স্থান পায়। এতে নারীর প্রবেশ নিষেধ। এটি প্রায় অবসর বিনোদনের প্রতিষ্ঠান। রাজ শাসন কার্যে প্রথম দিকে সক্রিয় ভূমিকা করলেও পরবর্তীকালে শুধু বিচার বিভাগের মধ্যেই গণ্ডি বদ্ধ হয়।
সমিতিতে অভিজাত ও বয়স্করা ছাড়াও গোষ্ঠির সকল মানুষই স্বাধীনভাবে অংশ গ্রহণ করে। এতে নারীরও প্রাধান্য রয়েছে। সভার প্রত্যেক সদস্যই রাজকার্যের সিদ্ধান্তে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে। কারণ সর্বসম্মতিক্রমে
রাজার শাসন প্রণালী স্থির হয়।
No comments