Header Ads

‘অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি’ :: গোবিন্দ দাস



 এই কবিতাটি আসাম মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনর্ভুক্ত HS second year এর সিলেবাসে রয়েছে। কবিতাটির ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ নিচে দেওয়া ভিডিও লিঙ্কে দেওয়া হল। সমস্ত ধরণের সম্ভাব্য প্রশ্ন উত্তর এতে বিস্তারিত দেওয়া হল। কোনো অসুবিধা হলে  WhatsApp এ অথবা E-mail এ যোগাযোগ কর। ধন্যবাদ।।


১। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ    প্রতিটি প্রশ্নের ১

প্রশ্নঃ গোবিন্দদাসের আদি পদবী কি ছিল?
উত্তরঃ গোবিন্দদাসের আদি পদবী ছিল সেন
প্রশ্নঃ দ্বিতীয় বিদ্যাপতি কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ গোবিন্দদাসকে দ্বিতীয় বিদ্যাপতি বলা হয়
প্রশ্নঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি বৈষ্ণব পদকল্পতরুগ্রন্থের অন্তর্গত
প্রশ্নঃ গোবিন্দদাসের দীক্ষা গুরুর নাম কি?
উত্তরঃ গোবিন্দদাসের দীক্ষা গুরুর নাম শ্রীনিবাস আচার্য
প্রশ্নঃ গোবিন্দদাস কোন যুগের কবি?
উত্তরঃ গোবিন্দদাস মধ্যযুগের চৈতন্য পরবর্তী কবি
প্রশ্নঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি বৈষ্ণব পদাবলীর কোন পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত?
উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি বৈষ্ণব পদাবলীর অভিসার পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত
প্রশ্নঃ গৌরচন্দ্রিকা, গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদ ও অভিসার পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি কে?
উত্তরঃ গৌরচন্দ্রিকা, গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদ ও অভিসার পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি হল গোবিন্দ দাস
প্রশ্নঃ গোবিন্দদাস প্রথম জীবনে কি ছিলেন?
উত্তরঃ গোবিন্দদাস প্রথম জীবনে শাক্ত ছিলেন
প্রশ্নঃ অভিসারে অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি কবিতাটি কোন ভাষায় রচিত?
উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি কবিতাটি ব্রজবুলি ভাষায় রচিত

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তরঃ  প্রতিটি প্রশ্নের মান ২

প্রশ্নঃ গোবিন্দদাসের পিতা ও পিতামহের নাম লেখ?
উত্তরঃ গোবিন্দদাসের পিতার নাম চৈতন্যভক্ত চিরঞ্জীব সেন, পিতামহের নাম পন্ডিত পুরন্দর দাস 

প্রশ্নঃ গোবিন্দদাসকে দ্বিতীয় বিদ্যাপতি বলা হয় কেন?
উত্তরঃ চৈতন্য পূর্ব যুগের কবি বিদ্যাপতির সঙ্গে তুলনা করে গোবিন্দদাস কে দ্বিতীয় বিদ্যাপতি বলা হয়, কারণ গোবিন্দ দাস ভাষা ছন্দ অলঙ্কার ব্যবহারে বিদ্যাপতির ভাবানুসারী ছিলেন।  

প্রশ্নঃ অভিসার কাকে বলে? অভিসার পদের শ্রেষ্ঠ কবি কে?
উত্তরঃ অভিসার শব্দটির অর্থ গমন তবে বৈষ্ণব সাহিত্যে অভিসার কথাটির বিশেষ অর্থ ও তাৎপর্য    আছে এখানে নায়কের নিকট নায়িকার গমনকেই অভিসার বলা হয়
অভিসার পদের শ্রেষ্ঠ কবি হলেন গোবিন্দদাস

প্রশ্নঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি পদে কে কার উদ্দেশে অভিসার যাত্রার পূর্ব প্রস্তুতি করছেন?
উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি পদে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে মিলনের জন্য শ্রীরাধা অভিসার যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন

প্রশ্নঃ  কন্টক গাড়ি কমল সম পদতল মঞ্জীর চীরহি ঝাঁপি- লাইনটির অর্থ লেখ
উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতির জন্য শ্রীরাধা পায়ের নুপুর ছেঁড়া কাপড়ে বেঁধে পদ্মের মতো পায়ের তলায় কাঁটা পুতে চলার অভ্যাস করছেন

প্রশ্নঃ গাগরি বারি ঢারি করু পীছল চলতহি অঙ্গুলি চাপি- লাইনটি অর্থ লেখ
উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতির জন্য শ্রীরাধা কলসির জল ঢেলে চলার পথ পিছল করছেন এবং সেই পথে পায়ের আঙ্গুল টিপে টিপে চলার অভ্যাস করছেন

প্রশ্নঃ ব্রজবুলি কি?
উত্তরঃ ব্রজবুলি হল বাংলা মৈথিলী মিশ্রিত এক সুমিষ্ট ভাষা এটি মধ্যযুগের একটি কৃত্রিম সাহিত্য ভাষা গোবিন্দ দাস অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি পদটি এই ভাষাতেই রচনা করেন

প্রশ্নঃ মন্দিরে যামিনী জাগি- কে মন্দিরে যামিনী জাগেন? কেন জাগেন?
উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি কবিতায় শ্রীরাধা গভীর রজনীতে তার নিজের মন্দিরে যামিনী জাগেন কারণ গভীর রাতে পরিবার পরিজনেরা ঘুমিয়ে পড়লে তিনি অভিসারের দুর্গম পথ অতিক্রম করার সাধনা বা প্রস্তুতি শুরু করবেন

প্রশ্নঃ কর-যুগে নয়ন মুদি/ চলু ভামিনী/ তিমির পয়ানক আশে- ভামিনী কে? লাইনটির সরল অর্থ বুঝিয়ে দাও
উত্তরঃ ভামিনী মানে হল নারী। এখানে শ্রীরাধাকে বোঝানো হয়েছে। লাইনটির অর্থ হল- শ্রীরাধা দুই হাতে চোখ ঢেকে অন্ধকারে পথ চলার অভ্যাস করছেন

৩। ব্যাখ্যা কর           প্রশ্নের মান ৩

প্রশ্নঃ দুতর পন্থ-গমন/ ধনি সাধয়ে/ মন্দিরে যামিনী জাগি।।
উত্তরঃ বৈষ্ণব কবি গোবিন্দ দাসের লেখা ‘অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি’ পদ থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে উদ্ধৃত অংশে ধনি হল কৃষ্ণের অভিসারিকা শ্রীরাধাঅংশটি শ্রীরাধার অভিসার প্রসঙ্গে ব্যবহার হয়েছে
কৃষ্ণ প্রেমে পাগলিনী রাধা কৃষ্ণ অভিসারে দুর্যোগপূর্ণ রাতেও যেতে হতে পারে তাই তিনি নিজ গৃহের উঠানে কাটা পুতে কলসির জল ঢেলে দুর্গম পথ তৈরি করেন। সেখানে সারারাত জেগে পায়ের আঙ্গুল টিপে টিপে চলার অভ্যাস করছেন শুধু তাতেও তিনি ক্ষান্ত হননি অনেক দুর্গম পথ অতিক্রম করতে হবে বলে তিনি রাতে ঘুমাতে পারেননি, জেগে রয়েছেন।

প্রশ্নঃ কন্টক গাড়ি কমল সম পদতল.....হরি অভিসারক লাগি- লাইনটি ব্যাখ্যা করো
 উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি কবি গোবিন্দ দাসের অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি পদ থেকে নেওয়া হয়েছে
 আলোচ্য অংশে শ্রী কৃষ্ণ প্রেমে বিভোর শ্রীরাধার গোপন অভিসারের প্রস্তুতি বর্ণনা করা হয়েছেকৃষ্ণ বিরহে কাতর রাধা কৃষ্ণের কাছে যাবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তার মনে তখন অনেক প্রশ্ন এসেছে, যদি সময়টা বর্ষাকাল হয় তাহলে রাস্তাঘাট কাঁটাযুক্ত কর্দমাক্ত হবে কিংবা পিচ্ছল হবেসেইজন্য অভিসারে যাবার সময় পায়ের নুপুরের আওয়াজ যাতে কেউ শুনতে না পায় তার জন্য রাধা দুপায়ের নুপুর এর উপর কাপড় বেঁধে নিয়েছেন পথে চলতে গিয়ে পায়ে কাঁটা ফুটতে পারে সেজন্য রাধা পথের উপর কাঁটা পুতে তার উপর হাঁটার অভ্যাস করছেন কিংবা কর্দমাক্ত রাস্তায় হাঁটার অভ্যাস করার জন্য কলসির জল ঢেলে উঠান পিচ্ছিল করে তার ওপর পায়ের আঙুল চেপে হাটা অভ্যাস করছেন এইরূপ বিভিন্নভাবে রাধা অভিসারে প্রস্তুতি নিচ্ছেন আসলে শ্রীরাধা জীবাত্মা রূপে শ্রীকৃষ্ণকে অর্থাৎ পরমাত্মাকে পাওয়ার জন্য নানা রূপে সাধনা করে চলেছেন

প্রশ্নঃ ভূজগগুরু পাশে- ভূজগগুরু  কথাটির অর্থ কী? কে ভূজগগুরুর পাশে কী জন্য গিয়েছিলেন? বিনিময়ে তিনি তাকে কি দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি গোবিন্দ দাসের অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে এখানে ভূজগগুরু কথাটির অর্থ হল সাপের ওঝা শ্রী রাধিকা অন্ধকার পথে গভীর রাতে শ্রীকৃষ্ণের জন্য যাত্রা করবেন সেই দুর্গম পথে সাপের আক্রমণ হতে পারে তাই শ্রীরাধা সাপের ওঝার কাছে মুখ বন্ধনের বা বশীকরণ মন্ত্র শিক্ষা নিতে গিয়েছিলেন
সাপকে বশীকরণ এর জন্য ভূজগগুরুকে হাতের কঙ্কন দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন

প্রশ্নঃ গোবিন্দদাস সম্পর্কে যা জানো লেখ
উত্তরঃ গোবিন্দদাস বৈষ্ণব কবি আনুমানিক ১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে বর্ধমান জেলার কাটোয়া শ্রীখন্ড গ্রামে নিজ মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন পিতা শ্রীচৈতন্য ভক্ত চিরঞ্জীব সেন। মাতা সুনন্দা দেবী। মাতামহ পন্ডিত দামোদর সেন। তিনি প্রথমে শাক্ত ছিলেন পরে শ্রীনিবাস আচার্যের দীক্ষায় বৈষ্ণব হন। তিনি গৌরচন্দ্রিকা, গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদ ও অভিসার পদ পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি চৈতন্য পূর্ব যুগের কবি বিদ্যাপতির সঙ্গে তুলনা করে তাকে দ্বিতীয় বিদ্যাপতিও বলা হয় ব্রজবুলি ভাষায় পদ রচনায় তিনি একজন দক্ষ কবি হিসেবে স্বীকৃত হন। বৃন্দাবনের গোস্বামীরা তাকে কবিরাজ উপাধি দিয়েছিলেনআনুমানিক ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়

প্রশ্নঃ অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি পদটির সারমর্ম লেখ
উত্তরঃ বৈষ্ণব কবি গোবিন্দদাসের অভিসারের পূর্ব-প্রস্তুতি পদটি বৈষ্ণব পদকল্পতরু থেকে নেওয়া হয়েছে বহু দুর্যোগপূর্ণ পথ অতিক্রম করে শ্রীরাধাকে শ্রীকৃষ্ণের কাছে পৌঁছতে হবে এই পদটিতে তাই তিনি বাড়িতেই দুর্গম পথ অতিক্রমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন
আলোচ্য পদে কবি শ্রীকৃষ্ণের কাছে রাধার অভিসারের প্রস্তুতি পর্ব বর্ণনা করেছেন রাধা কৃষ্ণের কাছে অভিসারে গমন করবেন কৃষ্ণ তার আরাধ্য দেবতা তার কাছে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার পথে পায়ে কাঁটা ফুটতে পারে তাই তিনি পথের উপর কাঁটা পুতে হাঁটার অভ্যাস করছেন বর্ষাকালে রাস্তার পিছল পথে পড়ে যেতে পারেন তাই কলসির জল ঢেলে উঠানের মাটি পিছল করে হাঁটার অভ্যাস করছেন অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তাই রাধা হাত দিয়ে চোখ ঢেকে অন্ধকারের পথ চলার অভ্যাস করছেন তাছাড়া পথে সাপ কামড়াতে পারে তাই সাপের ওস্তাদের কাছে হাতের কঙ্কন খুলে বশীকরণ মন্ত্র শিখে নিয়েছেন কৃষ্ণ থাকে অনেক দূরে তাই রাত্রি জেগে রাধা অভিসারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন গুরুজনেরা অনেক কথা বললেও রাধা তা শোনেনি এক কথা শুনে অন্য কথার উত্তর দেন অনেক কথা তিনি কানে না শোনার ভান করেন কেননা তিনি কৃষ্ণ চিন্তায় বিভোর হন এইভাবে প্রস্তুতি নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ বিরহে কাতর শ্রীরাধা তার কাছে পৌঁছাতে চান
          বৈষ্ণব আধ্যাত্মিক বা দার্শনিক ব্যাখ্যা অনুসারে এই বিশ্ব প্রকৃতির প্রতিটি জীব পরমাত্মা বা মহান ঈশ্বরের সাথে মিলিত হতে চায়। জীবাত্মার সঙ্গে পরমাত্মার মিলিত হবার যে যাত্রা সেই যাত্রা যথেষ্ট বিপদসংকুল শ্রীরাধা জীবাত্মার প্রতীক এবং শ্রীকৃষ্ণ পরম আত্মার প্রতিক। জীবাত্মার সঙ্গে পরমাত্মার মিলিত হবার জন্য যে দুর্গম যাত্রা তাই অভিসার

৪। শব্দের অর্থ লেখঃ- প্রশ্নের মান ১
 কন্টকঃ কাঁটা, মঞ্জীরঃ নুপুর, মন্দিরঃ মধ্যযুগে শব্দটি বাসগৃহ অর্থে ব্যবহৃত হতো ভূজগগুরুঃ সাপের ওঝা, ধনিঃ যুবতি।



কবিতাটির ব্যাখ্যাঃ 
       

               YouTube Link:       https://youtu.be/jijQYBABnYc





সরাসরি ভিডিওঃ  





1 comment:

Powered by Blogger.