প্রত্যহের ভারঃ বুদ্ধদেব বসু
বিষয় সংক্ষেপ
বুদ্ধদেব বসু আধুনিক বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কবি। "প্রত্যহের ভার" কবিতাটি "দ্রৌপদীর শাড়ি" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। কবিতাটিতে কবি তাঁর কাব্যসাহিত্যকে বিহঙ্গের সাথে তুলনা করেছেন। কবির কাছে কাব্যবাণী পাখির মতো উড়ে আসে। তিনি ছন্দ দিয়ে সেই কাব্যের
আশ্রয় তথা নীড় তৈরি করেন। কাব্যকে তিনি অভ্যর্থনা জানান। সেখানে
জীবনকে বৃক্ষ বলছেন। উড়তে উড়তে পাখি যেমন উড়া থামিয়ে
নীড়ে আশ্রয় নেয়। কখনও বেগচ্যূত বা ব্যর্থ হয়না। তেমনি কবি লিখতে লিখতে বেগচ্যুত হবেন না। পাখার থেকে যে বায়ুর কম্পন বেরোয় তা যেন ব্যর্থ হবে না। মানে সেই পাখির ভাষার আবেদন যে পৃথিবী ময় ছড়ায়... ভাষাকে যে ছন্দের বাঁধন দিচ্ছেন
বা ছন্দ দিয়ে বাঁধছেন, মানে কবি কবিতা লিখছেন তা যেন বছরে
বছরে অবিরত থাকে। ভাগ্যের বিড়ম্বনাতেও যেন থাকে। আর যদি লিখতে লিখতে, বলতে বলতে, ভাবতে ভাবতে ক্লান্তি আসে, মনের শান্তিও চলে যায়, বুকে যদি হতাশা ভার হয়ে আসে, আর
মৃত্যুর ক্ষণ চেপে আসে---তবুও যেন একই কাজ করে যেতে পারেন। মানে লিখে
যেতে পারেন। লেখার আনন্দকেই তিনি মৃত্যুর মুহূর্তেও অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।
বাণীর আত্মাকে কবি আপন সত্তা বলে জেনেছেন। আসলে তাঁর কাব্যবাণীতে কবিই প্রাণ যোগান... যে মূহুর্তে সে বাণীরূপ পাখি কবির ছন্দনীড়ে আশ্রয় নিল, মানে কবিতাটি লেখা হলো---সেই মুহুর্তে কাল
থেমে গেল। সে কবিতা কালের বিচারে বাঁচল কি মরল---তাতে কীই বা আসে যায়... কিন্তু সৃষ্টি সত্তার আনন্দে কবি প্রতিদিনকার জীবনের সমস্ত দুঃখ কষ্ট অর্থাৎ জীবনের ভার দূর করে দিতে সমর্থ হল।
No comments