Header Ads

Header ADS

সমাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা - ১

 

সমাস

Ø সমাস শব্দটি সংস্কৃত, তৎসম, বিশেষ্য পদ।

Ø সমাস শব্দটির বুৎপত্তি সম - অস ধাতু অ প্রত্যয়।

Ø সমাসের সাধারণ অর্থ সংক্ষেপ, সমাহার, মিলন।

Ø ব্যকরণগত অর্থ – অর্থগতভাবে পারস্পরিক সম্বন্ধযুক্ত একাধিক পদের একপদীকরণ।

 

সমাসের ব্যবহার

Ø সংক্ষেপ ও শ্রুতি মধুরতার জন্য ব্যবহৃত হয়।

Ø সংক্ষেপে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে সমাস ব্যবহৃত হয়।

 

সমাস সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

Ø সমস্যমান পদ

Ø সমস্তপদ বা সমাসদ্ধ পদ

Ø ব্যাসবাক্য বা সমাস বাক্য বা বিগ্রহ বাক্য।

 

ক) সমস্যমান পদ

সমাস একটি প্রক্রিয়া। অর্থযুক্ত বিভিন্ন পদের মিলনে এক পদে পরিণত হয়। যেসব পদের দ্বারা সমস্ত পদ তৈরি হয়, সেইসব পদগুলিকে সমস্যমান পদ বলে। যেমন –

পিতা ও মাতা – পিতামাতা

এখানে পিতা ও মাতা পদগুলি দিয়ে ‘পিতামাতা’ সমস্তপদটি সৃষ্টি হয়েছে। অতএব পিতা ও মাতা হল সমস্যমান পদ।

সমস্যমান পদ দুই রকমের। ব্যসবাক্যের পুর্বের পদটি পূর্বপদ ও পরের পদটি পরপদ বা উত্তর পদ। 

পিতা ও মাতা – পিতামাতা

এখানে পিতা ও মাতা হল সমস্যমান পদ। পিতা পূর্বের পদ। এটি পুর্ব পদ। মাতা পরে বসেছে। এটি পর পদ বা উত্তর পদ।

খ) সমস্তপদ বা সমাস বদ্ধ পদ

সমাসের একাধিক পদ বা সমস্যমান পদের মিলনে যে নতুন পদটি সৃষ্টি হয় তাকে সমস্তপদ বা সমাসবদ্ধ পদ বলে। যেমন –

 পিতা ও মাতা – পিতামাতা

এখানে পিতা ও মাতা সমস্যমান পদের দ্বারা পিতামাতা সমস্ত পদটি সৃষ্টি হয়েছে।

 

গ) ব্যাসবাক্য বা সমাসবাক্য  -

ব্যাস মানে বিস্তৃত। ব্যাসবাক্য হল বিস্তৃত বাক্য। যে বাক্য বা বাক্যাংশ দিয়ে সমস্ত পদের অর্থ বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়, তাকে ব্যাসবাক্য বলে। যেমন -

পিতা ও মাতা – পিতামাতা

পিতামাতা সমস্ত পদটির অর্থ পিতা ও মাতা বাক্যাংশ দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। অতএব পিতা ও মাতা হল ব্যাস বাক্য। ব্যাসবাক্য সমস্যমান পদের সমন্বয়ে সৃষ্টি।

 

সমাসের শ্রেণিবিভাগ

সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সমাসকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন।

       ১। সংযোগমুলক  - দ্বন্দ্ব সমাস 

২। ব্যাখ্যমুলক – তৎপুরুষ, কর্মধারয়, দ্বিগু, প্রাদি, নিত্য ও অব্যয়ীভাব

৩। বর্ণনা মুলক – বহুব্রীহি

 

সব মিলে বাংলা সমাসকে ৯ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।

 

১। দ্বন্দ্ব সমাস

Ø দ্বন্দ্ব একটি সংস্কৃতি শব্দ, বিশেষ্য পদ।

Ø দ্বি + দ্বি = দ্বন্দ্ব, নিপাতনে সন্ধি হয়।

Ø সাধারণ অর্থ কলহ, বিবাদ।

Ø ব্যকরণ অর্থ মিলন। সমাসে পদের সঙ্গে পদের মিলন ঘটে।

Ø এই সমাসে সব পদের সমান অর্থ প্রাধান্য থাকে।

Ø যে সমাসে প্রত্যেকটি সমস্যমান পদের অর্থ সমানভাবে প্রাধান্য পায় তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।

উদাহরণ –

ছেলে ও মেয়ে = ছেলেমেয়ে

এই সমাসে ছেলে পূর্ব পদ। মেয়ে পর পদ। ছেলে ও মেয়ে হল সমস্যমান পদ। সমসযমান পদটি সংযোজক ‘ও’ দ্বারা যুক্ত হয়ে সমাসবদ্ধ হয়েছে। আর সমাসের অর্থ হিসেবে ‘ছেলে’ ও ‘মেয়ে’ পদটি সমান প্রাধান্য পাচ্ছে।

 

চেনার উপায় – 
ক)
 পূর্বপদ ও পরপদের অর্থের প্রাধান্য থাকে
খ)
 পূর্বপদ ও পরপদ সংযোজক অব্যয়(ও, এবং, আর ইত্যাদি) দ্বারা যুক্ত থাকে।

দ্বন্দ্ব সমাসের গঠনগত –

ক) বিশেষ্য পদের সমাস

খ) বিশেষণ পদের সমাস

গ) সর্বনাম পদের সমাস

ঘ) ক্রিয়াপদের সমাস

অর্থগত শ্রেণি

ক) সমার্থক দ্বন্দ্ব

খ) বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব

 

এছাড়াও একশেষ দ্বন্দ্ব সমাস ।

 

১) সমার্থক দ্বন্দ্বঃ সমস্যমান পদ্গুলো সমার্থক হবে। হাট-বাজার, ঘর-দুয়ার, কল-কারখানা, পত্র-পত্রিকা ইত্যাদি।

২) বিপরীতার্থক দ্বন্দ্বঃ উত্তরপদ ও পূর্বপদ পরস্পরের বিপরীত হবে। যেমন- আয়-ব্যয়, ছেলে-বুড়ো ইত্যাদি।

৩) বিরোধার্থক দ্বন্দ্বঃ সমস্যমান পদ্গুলো যদি পরস্পরের বিরোধী বা শত্রুভাবাপন্ন হয় তাহলে বিরোধার্থক দ্বন্দ্ব হবে। মনে রাখতে হবে বিরোধার্থক ও বিপরীতার্থক একই কথা নয়। যেমন- দা-কুমড়া, অহি-নকুল ইত্যাদি।

৪) অলুক দ্বন্দ্বঃ অলুক = নেই লোপ যার, অর্থাৎ বিভক্তির লোপ হয় না। যেমন- দুধে-ভাতে, জলে-স্থলে ইত্যাদি।

৫) বহুপদী দ্বন্দ্বঃ দুইয়ের অধিক পদে দ্বন্দ্ব সমাস হলে তাকে বহুপদী দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমনঃ রূপ ও রস ও গন্ধ ও শব্দ ও স্পর্শ = রূপ-রস-গন্ধ-শব্দ-স্পর্শ; সাহেব বিবি ও গোলাম= সাহেব-বিবি-গোলাম ইত্যাদি।

৬) একশেষ দ্বন্দ্বঃ দুই বা ততোধিক পদ যদি একটি নতুন পদে পরিণত হয় তখন তাকে একশেষ দ্বন্দ্ব বলে। তুমি, আমি ও সে = আমরা, তুমি ও সে = তোমরা ইত্যাদি।



No comments

Powered by Blogger.