হঠাৎ দেখার অনুভূতি! : ড. পরিতোষ রায়
হঠাৎ দেখার অনুভূতি!
হাসি হাসি মুখ, অসম্ভব সুন্দরী। স্টেশন ফ্লাই ওভারের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা দূর থেকে দৃষ্টি পড়তেই অবাক হলাম। কিছুটা কনফিউসনএ চলে গেলাম। ঠিক স্থির করে উঠতে পারছিনা। আগের আর এখানকার ছবি মেলাতে গিয়েই যত সমস্যায় পড়লাম। ভাবলাম দৃষ্টি বিভ্রম। যার সঙ্গে তুলনা করছি সে নয়। চোখ কচলাতে কচলাতে মনে করার চেষ্টা করছি।
ট্রেনের জানলার ফাঁকে মুখাবয়ব দেখে মনে করার চেষ্টা করছি। আমার ট্রেন ছেড়ে দিল। আমি তাকে দেখতে পাচ্ছি সালোয়ার-কামিজে দণ্ডায়মান। সেই দীর্ঘাঙ্গী এবং আত্মপ্রত্যয়ী।
আমি হতবম্ভ। মনে করতে পেরেছি। সে এখানে কেন? ফ্লাইওভারের পাশে দাড়িয়ে কী করছে! নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি কোনটারই উত্তর পাচ্ছিনা।
কয়েকদিনের জন্য এক বাড়িতে থাকা, খুব আদর যত্নএ দিন কাটানো স্মৃতি। তবে বেশি দিন না হলেও গেঁথে যাওয়া স্মৃতি ভুলার নয়। খুব মিশুকে। সহজে সবকিছু মিলিয়ে দিতে পারতেন। প্রেরণা পাওয়ার মতো ও দেওয়ার মতো উদ্যমী নারী। তারপর সময়ের স্রোতে কে কোথায় হারিয়ে যাই। জীবন - জীবিকার টানে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তখন থেকে কোনো যোগাযোগ হয়নি। সব স্তিমিত হয়ে যায়। স্মৃতি চাপা পরে।
সে ব্যস্ত থাকতে খুব ভালোবাসে। তার কাছে অনেক শিখেছি। ব্যস্ত থাকলে টেনশন হয়না। Bp সুগারের ঝামেলা নাকি থাকে না, জীবন্ত বাঁচা যায়। জীবন্ত বাঁচতে গিয়ে সে ছুটে বেড়ায় এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। পাহাড়ে জঙ্গলে এবড়োখেবড়ো এই সংসারে।
সেদিন থেকে মনে মনে তাকে খুঁজে চলেছি। দীর্ঘ দুই সপ্তাহ পরে এক বন্ধুর মায়ের দৌলতে ফোন নাম্বার পেয়েছি। দেড় ঘণ্টা কথা হয়। যেন খাচা বন্দী পাখি বাইরে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচল।
এখন সে ডিমাপুরে থাকে। বাড়িতে যাওয়ার নিমন্ত্রণ করল। তার প্রিয় সব খাবারগুলো অফার করল। আমিও আনন্দ আর খুশিতে ফুটন্ত তেলের মতো সব কিছুতে হ্যাঁ বলেছি। সে কিছুদিন আগে হাফ সেঞ্চুরি পার করেছে। সেই সুবাদে বাপের বাড়ি গেছে। ফ্লাইওভারের পাশে তার দাদার জন্য অপেক্ষা করেছে। আমার সেই প্রেরণাদাত্রী দিদি।
No comments