গণেশ জননী - বনফুল - ২
জ) “গণেশ জননী” গল্পের পশু চিকিৎসক
রোগী দেখার ফি নেননি কেন ?
উত্তরঃ “গণেশ জননী” গল্পটি একটি হাতিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। কচ্ছির এক ব্যবসাদার প্রাণ বাঁচানোর জন্য হাতিটি
মধ্যবিত্ত পরিবারের এক ভদ্রলোককে উপহার দিয়েয়েছিলেন। প্রতিপালকের স্ত্রী হাতির ছোট্ট দুষ্টু
দুষ্টু চোখ, শুড় দেখে আনন্দিত হয় এবং নিঃসন্তান গিন্নি
আনন্দে বলে ওঠে- “ও আমার গণেশ এসেছে। বলেই তার সামনে এক বাটি দুধ এগিয়ে দিলেন ”। অর্থাৎ নিঃসন্তান গিন্নি ছোট্ট
দুষ্টু দুষ্টু চোখ, শুড় দেখে তাকে ভালবেসে ফেলেছেন। তাকে
সন্তানের মত লালন পালন করেছেন। পুজোর সময় রুপোর ঘন্টা বানিয়ে দিয়েছেন। গণেশও
সন্তানের মতোই গিন্নির স্নানের সময় গামছা বালতি দোলাতে দোলাতে নিয়ে গিয়েছে
কিংবা রান্নাঘরে গরমের সময় পাখা দিয়ে হাওয়া করেছে। তেমনি গণেশও মানুষের মতো মান অভিমান করেছে। একদিন একনাগড়ে ৩৬ ঘণ্টা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। প্রকৃত মায়ের মতোই গণেশের পাশাপাশি সেও খাওয়া বন্ধ করে
দিয়েছে। তার অসুখ হয়েছে ভেবে
ডাক্তারকে খবর দিয়েছে। গণেশের সেবা-শুশ্রূষার জন্য বারবার মাথায় হাত বুলিয়ে লেবু
মিশ্রিত বার্লি খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে। তাড়াতাড়ি
সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য শেষে ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়েছে। এমনকি ডাক্তারের ফি
দেওয়ার জন্য নিজের অলংকার বন্ধক দিয়েছে। তবে চিকিৎসক আর অন্য কোথাও হলে ২০০ টাকা
ফি নিতেন । এখানে গণেশের প্রতি প্রতিপালক ও তার স্ত্রীর অসীম স্নেহ-মমতা দেখে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েছেন। এবং তাদের
স্বচ্ছলতা না থাকা সত্বেও একটি পশুর প্রতি অপত্য স্নেহে মানবিকতা খুঁজে পেয়েছেন। তাই লেখক রোগী দেখার পরও ফি নেননি।
ঝ) “গণেশ জননী” গল্পে মানুষ ও জীব
জগতের যে সম্প্রীতি এবং বাৎসল্যের ছবি প্রকাশিত হয়েছে তা পরিস্ফুট করো।
উত্তরঃ জীব জগতের সঙ্গে মানুষের আত্মিক সম্পর্ক চিরকালীন। বনফুলের “গণেশ জননী” গল্পটিতে মানুষ ও
জীবজন্তুর আন্তরিকতার সম্পর্কটি মানবিকতায়
ধরা পরেছে।
গল্পটি গণেশ, গণেশের প্রতিপালক
ও তার স্ত্রীকে নিয়ে আবর্তিত হয়েছে। প্রতিপালক দম্পতি নিসন্তান। মাতা যেমন সন্তানের জন্য নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকেন ঠিক তেমনি গণেশ জননী
সেই ভদ্রমহিলা গণেশের চিকিৎসার জন্য সর্বস্ব দিতে
প্রস্তুত ছিলেন। তার ভালোবাসা সন্তান বাৎসল্য জীব জগতের সঙ্গে মানুষের
আত্মিক সম্পর্ককে এক নতুন মহিমায় উদ্ভাসিত করে তুলেছে।
“গণেশ জননী” গল্পটি একটি হাতিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। কচ্ছির এক ব্যবসাদার প্রাণ বাঁচানোর জন্য হাতিটি
মধ্যবিত্ত পরিবারের এক ভদ্রলোককে উপহার দিয়েয়েছিলেন। প্রতিপালকের স্ত্রী হাতির ছোট্ট দুষ্টু
দুষ্টু চোখ, শুড় দেখে আনন্দিত হয় এবং নিঃসন্তান গিন্নি
আনন্দে বলে ওঠে- “ও আমার গণেশ এসেছে। বলেই তার সামনে এক বাটি দুধ এগিয়ে দিলেন ”। অর্থাৎ নিঃসন্তান গিন্নি ছোট্ট
দুষ্টু দুষ্টু চোখ, শুড় দেখে তাকে ভালবেসে ফেলেছেন। তাকে
সন্তানের মত লালন পালন করেছেন। পুজোর সময় রুপোর ঘন্টা বানিয়ে দিয়েছেন। গণেশও
সন্তানের মতোই গিন্নির স্নানের সময় গামছা বালতি দোলাতে দোলাতে নিয়ে গিয়েছে
কিংবা রান্নাঘরে গরমের সময় পাখা দিয়ে হাওয়া করেছে। তেমনি গণেশও মানুষের মতো মান অভিমান করেছে। একদিন একনাগড়ে ৩৬ ঘণ্টা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। প্রকৃত মায়ের মতোই গণেশের পাশাপাশি সেও খাওয়া বন্ধ করে
দিয়েছে। তার অসুখ হয়েছে ভেবে
ডাক্তারকে খবর দিয়েছে। গণেশের সেবা-শুশ্রূষার জন্য বারবার মাথায় হাত বুলিয়ে লেবু
মিশ্রিত বার্লি খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে। তাড়াতাড়ি
সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য শেষে ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়েছে। এমনকি ডাক্তারের ফি
দেওয়ার জন্য নিজের অলংকার বন্ধক দিয়েছে। অর্থাৎ সন্তানের জন্য মা যেমন নিজের
সর্বস্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকেন ঠিক তেমনি গণেশ জননী গণেশের জন্য
সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন। এক কথায় মা যেমন সন্তানকে স্নেহ করেন ঠিক তেমনি প্রতিপালক
ভদ্রলোকটির স্ত্রীও গণেশকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ
করতেন। লালন পালন করেছেন। এবং
মান অভিমানও করতেন। তাকে কেন্দ্র করে জীবনের আনন্দ-বেদনা খুঁজে পেয়েছেন। এইভাবে একটি পশুর জন্য মানুষের ভালোবাসা ও বেদনা মানব জগতের
সঙ্গে পশুর জগতকে মিলিয়ে দিয়েছে। আর বাৎসল্য
প্রেমে মানুষের সঙ্গে জীব জগতের সম্প্রীতি ঘটেছে।
ঞ) ব্যাখ্যা
করঃ-
“তাহলে আর টাকার দরকার হবেনা পোদ্দার।
গয়নাগুলো তুমি ফেরত দিয়া যাও”।
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের “গণেশ জননী” গল্প থেকে নেওয়া
হয়েছে।
চিকিৎসককে ফি
দেওয়ার জন্য প্রতিপালক পোদ্দারের কাছে স্ত্রীর গয়নার বন্ধক দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসক ফি নিতে রাজি না হলে
সেগুলো ফেরত দেন। ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে গণেশের প্রতিপালক উদ্ধৃত লাইনটি ব্যক্ত করেছেন।
গণেশ খাওয়া-দাওয়া বন্ধ
করলে প্রতিপালক ও তার স্ত্রী হাতির অসুখ হয়েছে
ভেবে চিকিৎসককে ডেকে আনলেন। চিকিৎসক গণেশের পরীক্ষা করে দেখলেন, সে সম্পূর্ণ সুস্থ। অভিমান করে খাওয়া
বন্ধ করেছে। কিন্তু গণেশ ও তার প্রতিপালকের সন্তান স্নেহ ও
আত্মিক সম্পর্ককে লক্ষ্য করে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন। পশুর প্রতি তাদের
ভালোবাসা ও বাৎসল্য দেখে সহানুভূতিশীল
হয়ে পড়েন। এবং ফি
নিতে অস্বীকার করেন। তখন প্রতিপালক
বারান্দায় দাঁড়ানো একজনকে পোদ্দার সম্মোধন করে গয়নাগুলো রেখে যেতে বললেন।
No comments