Header Ads

Header ADS

দিবসের শেষে জগদিশ গুপ্ত

 

দিবসের শেষে

জগদিশ গুপ্ত

 

 লেখক পরিচিতি

বাংলা সাহিত্যের ব্যতিক্রমধর্মী লেখক হলেন জগদীশ গুপ্ত তার সম্পূর্ণ নাম জগদিশ চন্দ্র সেনগুপ্ত সাহিত্যচর্চায় তিনি জগদীশ গুপ্ত নামেই অধিক পরিচিত। ১৮৮৬ সালে কুষ্টিয়া জেলার আমলাপাড়া জন্মগ্রহণ করেন পিতার নাম কৈলাস চন্দ্র গুপ্ত মায়ের নাম সৌদামিনী দেবী জগদীশের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুষ্টিয়াতেইরে কলকাতায় এসে ম্যাট্রিকুলেশন ও ফাস্ট আর্টস পাস করেন তারপর স্টেনোগ্রাফি ও টাইপিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কলকাতায় কাটে প্রথমে কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও ছোটগল্প লিখেই তিনি বাংলা সাহিত্যের স্থায়ী আসন লাভ করেন। ‘বিজলী’ ‘কালিকলম’ ও ‘কল্লোল প্রভৃতি সেকালের পত্রিকাতেই তার গল্প প্রকাশিত হয়েছে। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে জগদীশ গুপ্তের প্রথম গল্প সংকলন বিনোদিনী প্রকাশিত হয় লেখকের প্রধান গল্পগ্রন্থগুলি হল ‘বিনোদিনী’, ‘রুপের বাইরে’ ‘শশাঙ্ক কবিরাজের স্ত্রী’ ইত্যাদি ছোটগল্পের পাশাপাশি অসাধু সিদ্ধার্থ’ লঘুগুরু’ প্রভৃতি উপন্যাস রচনা করেন। বিষয়বস্তু এবং প্রকাশরীতির দিক থেকে জগদীশ গুপ্ত বাংলা গল্প উপন্যাসে এক নতুন ধারার সূচনা করেছিলেন। অবশেষে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ১৫ই এপ্রিল তিনি পরলোকগমন করেন

 

দিবসের শেষে গল্পটির সারাংশ

দিবসের শেষে গল্পটি জগদীশ গুপ্তের বিনোদিনী গল্পগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে এই গল্পে নিয়তির নিষ্ঠুরতাকে তুলে ধরে মানব-মনের অসহায়তাকে পরিস্ফুট করেন। দিবসের শেষে বলতে দিনের শেষে কিন্তু এখানে একটি পরিবার ও জীবনের শেষ পরিণতির কথা বলা হয়েছে।

তি নাপিতের পাঁচ বছরের ছেলে পাঁচু। সে বহু আরাধনার ধন হঠাৎ একদিন মাকে বলে ফেলে – ‘মা আজ আমায় কুমিরে নেবে’। এই কথায় কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিলনা। কারণ গ্রামের একমাত্র নদী কামদানি রাক্ষসী নয় সে জননীর মতো মমতাময়ী কিন্তু নিষ্ঠুর নিয়তির পরিহাসে কথাটি গল্পের শেষে কঠিন বাস্তবের রূপ নেয় পাচুর মুখে অসংলগ্ন কথা শুনে তার মা-বাবা দুজনের মনে অজানা আশংকা সৃষ্টি হয় তারা নানাভাবে মনকে বোঝানোর চেষ্টা করে। তবুও দুশ্চিন্তা রয়ে যায় ভয়ে ভয়ে থাকেমন থেকে এই ভয় দূর করার জন্য রতি তাকে জোর করে নদীতে নিয়ে যায়। স্নান করে দেয় সকলে নিশ্চিন্ত হয় ঘটনাক্রমে সেদিন বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে কাঁঠাল খেতে গিয়ে সারা দেহে কাঁঠালের রস মাখে। তাকে পরিষ্কার করার জন্য নদীতে স্নান করাতে যায় এই কাজ নির্বিঘ্নে ঘটে কিন্তু ফেলে আসা একটি ঘটি নিতে গিয়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। সেই সময় আচমকা একটি কুমির এসে তাকে ধরে নিয়ে যায় এটাই নিয়তির নিষ্ঠুর বিধান। পাঁচুর মৃত্যু এই ভাবেই স্থির ছিল। বাকি ঘটনা উপলক্ষ মাত্র। ভবিষ্যৎ পরিণতি পাচুর ভাবনার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। রতি নারানীরা এভাবে নিয়তির কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে।

 

অতি প্রশ্নোত্তর

 ) দিবসের শেষে ছোট গল্পটির লেখক কে?

উত্তরঃ দিবসের শেষে ছোট গল্পটির লেখক জগদিশ চন্দ্র গুপ্ত

খ) দিবসের শেষে ছোট গল্পটি লেখকের কোন গল্প সংগ্রহ থেকে গৃহীত হয়েছে?

উত্তরঃ ‘দিবসের শেষে ছোট গল্পটি লেখকেবিনোদিনী গল্প সংগ্রহ থেকে গৃহীত হয়েছে

গ) বাড়ির পূর্ব দিকে কোন নদী প্রবাহিত?

উত্তরঃ বাড়ির পূর্ব দিকে কামদা নদী প্রবাহিত

ঘ) রতি নাপিতের ছেলের নাম কি?

উত্তরঃ রতি নাপিতের ছেলের নাম পাঁচু

ঙ) নারানী কে?

উত্তর রতি নাপিতের স্ত্রী, পাঁচুর মা

 

 

২. সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

ক) পাচুর অসংলগ্ন কথার দুটি উদাহরণ দাও

উত্তরঃ রতি নাপিতের একমাত্র ছেলে পাচু। তার দুটি অসংলগ্ন কথা হল

) পাঁচু একদিন সন্ধ্যাবেলায় একটি পেঁচাকে তাদের ঘরে ঘরের চালে বসে অট্টহাস্য করতে দেখেছিল

) আর একদিন একটা বড় কচ্ছপকে তার বাচ্চা সহ তাদের উঠানে দাঁড়িয়ে নৃত্য করতে দেখেছিল এইসব কথা পাঁচু তার মাকে বলেছিল

 

) ‘বহু আরাধনার ধন এই পাঁচু একদিন সকালবেলা ঘুম ভাঙ্গিয়া উঠিয়াই যে কথাটি বলিয়া বসিল তাহা যেমন ভয়ঙ্কর তেমনি অবিশ্বাস্য ভয়ঙ্কর ও অবিশ্বাস্য’ – ‘ভয়ঙ্কর ও অবিশ্বাস্যকথাটি কী? পাঁচুকে কেন বহু আরাধনার ধন বলে উল্লেখ করা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘ভয়ঙ্কর ও অবিশ্বাস্যকথাটি হলো মা আজ আমায় কুমিরে নেবে’।

পাঁচুর জন্ম হবার আগে পাঁচুর মায়ের আরও তিনটি পুত্রসন্তান জন্মে ছিল কিন্তু তারা কেউই বাঁচেনি তাই পাচুর মা নারানি বহু জায়গায় মানসিক করে, অনেক তাবিজ-কবজ ধারণ করে, এই পাঁচুকে পুত্ররূপে পেয়েছেন সেই জন্য পাঁচুকে বহু আরাধনার ধন বলা হয়েছে

গ) ‘রতি স্ত্রীর মুখে পাচুর উক্তি শুনিয়া পাঁচুকে চোখ রাঙ্গাইয়া ধমকাইয়া দিল। এই সংশ্রবে তাহার মনে পড়িয়া গেল তাহাদের গ্রামের মৃত অধর বক্সীর কথাটা’ - মৃত অধর বক্সীর কথাটা কী ছিল?

উত্তরঃ মৃত অধর বক্সীর রতিরই গ্রামের বাসিন্দা। সে একবার নৌকা যাত্রা পূর্বে সন্ধ্যাবেলায় আবছায়া জ্যোৎস্নায় নিজের ছায়া দেখে আঁতকে উঠেছিলনিজের ছায়ার দিকে আঙুল দেখিয়ে ও কে! ও কে! - বলে চিৎকার করেছিল তার সেই ভয়ার্ত চোখের দিকে তাকাতে সেদিন কারো সাহস হয়নি জনৈক জ্ঞানী ব্যক্তি তাকে দেখে বলেছিলেন - ব্যাপারটা ভালো নয় এরকম মনের ভুল হয় - পাগলের বা যার মরণ ঘনিয়ে আসে তারঅবশেষে অধর বক্সীর মৃত্যু হয়। নৌকা যাত্রা করে সে আর ফিরে আসেনি।

ঘ) ‘সেদিন বিকালে ঘুম ভাঙ্গিয়া নারানী বারান্দায় তাহাকে দেখিয়া সমবয়সী অনেকগুলি ছেলেমেয়ে বিদ্যুৎবেগে অদৃশ্য হইয়া গেল’। - ‘বিদ্যুৎবেগে বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ছেলেমেয়েদের বিদ্যুৎবেগে অদৃশ্য হবার কারণ কী?

উত্তরঃ এখানে বিদ্যুৎবেগে বলতে বিদ্যুতের মত বেগে অর্থাৎ খুব দ্রুতগতিতে পালানোর কথা বলা হয়েছে

নারানি দুপুরের অবসরে ঘুমোচ্ছিলসেই অবসরে পাচু ও তার সঙ্গীরা পাকা কাঁঠাল ভেঙ্গে খেয়েছিল। কাঁঠাল খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি না জানার সমস্ত শরীরে কাঁঠালের রস লেগে যায়। সেই সময় নারানী ঘুম ভাঙ্গে। বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই পাচু ও তার সঙ্গীরা বিদ্যু গতিতে পালিয়ে যায়কিন্তু পাচু নারানির ডাকে বাড়ির সীমানার বাইরে যেতে পারেনি

ঙ) ‘ছেলের আমার এতক্ষণে হাসি ফুটেছে’ – বক্তা কে? ছেলের মুখে হাসি ফোটার কারন কী?

উত্তরঃ এখানে বক্তা হলেন পাচুর মা নারানি

পাচুর ভয় ছিল তাকে কুমিরে নিয়ে যাবে তাই সে নদীতে স্নান করতে যেতে চাইছিল না অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে তার মা তাকে বাবার সঙ্গে নদীতে স্নান করতে পাঠায় তার বাবা তাকে স্নান করিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। নিজে স্নান করে বাড়িতে ফিরে ছেলের খোঁজ নেয় পাঁচু তখন ভাত খাচ্ছে; তা শুনে তার বাবা ঠাট্টা করে বলে – “কেমন কুমিরে নেয়নি তো?” একথা শুনে পাচুর মুখে হাসি ফোটে অর্থাৎ আগের অসংলগ্ন কথা গুলোর ভুল ভেঙ্গে যাওয়ায় তার মুখে হাসি ফুটে উঠে।

 

বড় প্রশ্ন উত্তর

ক) নিয়তি অমুক তার কাছে মানুষ অসহায় দিবসের শেষে গল্প অবলম্বনে বাক্যটির সত্যতা নিরূপণ করো

উত্তরঃ ‘দিবসের শেষে গল্পটি জগদীশ গুপ্তের বিনোদিনী গল্পগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে এই গল্পে নিয়তির নিষ্ঠুরতাকে তুলে ধরে মানব-মনের অসহায়তাকে পরিস্ফুট করেন। দিবসের শেষে বলতে দিনের শেষে কিন্তু এখানে একটি পরিবার ও জীবনের শেষ পরিণতির কথা বলা হয়েছে।

তি নাপিতের পাঁচ বছরের ছেলে পাঁচু। সে বহু আরাধনার ধন হঠাৎ একদিন মাকে বলে ফেলে – ‘মা আজ আমায় কুমিরে নেবে’। এই কথায় কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিলনা। কারণ গ্রামের একমাত্র নদী কামদানি রাক্ষসী নয় সে জননীর মতো মমতাময়ী কিন্তু নিষ্ঠুর নিয়তির পরিহাসে কথাটি গল্পের শেষে কঠিন বাস্তবের রূপ নেয় পাচুর মুখে অসংলগ্ন কথা শুনে তার মা-বাবা দুজনের মনে অজানা আশংকা সৃষ্টি হয় তারা নানাভাবে মনকে বোঝানোর চেষ্টা করে। তবুও দুশ্চিন্তা রয়ে যায় ভয়ে ভয়ে থাকেমন থেকে এই ভয় দূর করার জন্য রতি তাকে জোর করে নদীতে নিয়ে যায়। স্নান করে দেয় সকলে নিশ্চিন্ত হয় ঘটনাক্রমে সেদিন বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে কাঁঠাল খেতে গিয়ে সারা দেহে কাঁঠালের রস মাখে। তাকে পরিষ্কার করার জন্য নদীতে স্নান করাতে যায় এই কাজ নির্বিঘ্নে ঘটে কিন্তু ফেলে আসা একটি ঘটি নিতে গিয়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। সেই সময় আচমকা একটি কুমির এসে তাকে ধরে নিয়ে যায় এটাই নিয়তির নিষ্ঠুর বিধান। পাচুর মৃত্যু এই ভাবেই স্থির ছিল। বাকি ঘটনা উপলক্ষ মাত্র। ভবিষ্যৎ পরিণতি পাচুর ভাবনার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। রতি নারানীরা এভাবে নিয়তির কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে।

 

) ‘ছেলের সর্বনেশে কথা শুনিয়া নারাণী প্রথমটা ভয়ানক চমকাইয়া উঠলেও একটু ভাবিতেই দুর্ভাবনা কাটিয়া তার বুক হালকা হইয়া গেল”।

ক) নারাণী কে? তার ছেলের নাম কী?

খ) ছেলের কোন কথাকে সর্বনেশে কথা বলা হয়েছে?

গ) কোন ভাবনা নারানীর বুক হালকা করল?

ঘ) ছেলের সর্বনেশে কোথায় কীভাবে বাস্তব রূপ নিয়েছিল, তা বিবৃত করো উত্তরঃ ক) নারানী হল রতি নাপিতের স্ত্রী।  নারানীর ছেলের নাম পাঁচু

খ) একদিন ঘুম থেকে উঠে মায়ের সঙ্গে ক্ষেতের দিকে যাওয়ার পথে হঠাৎ পাঁচু বলে উঠেছিল – ‘মা আজ আমায় কুমিরে নেবে!’ পাচুর এই কথাকে সর্বনেশে কথা বলা হয়েছে

গ) ছেলের সর্বনেশে কথা শুনে নারানী প্রথমটা ভয়ে চমকে উঠে। একটু ভাবার পর তার দুর্ভাবনা কেটে বুক হালকা হয়ে যায়। পাঁচুর মা ভেবে দেখেছে তাদের পাগল ছেলে এরূপ অসম্ভব কথা আগেও অনেকবার বলেছে একদিন পাঁচু একটা পেঁচাকে সন্ধ্যা বেলায় তাদের ঘরের চালে বসে অট্টহাস্য করতে দেখেছিল আর একদিন একটি প্রকাণ্ড কচ্ছপকে বাচ্চা সহ তাদের উঠানে দাঁড়িয়ে নৃত্য করতে দেখেছিল পাচুর এইসব অসংলগ্ন কথার কোন মানে নেই ভেবেই নারানীর বুক হালকা হয়েছিল

ঘ) ছেলের অসংলগ্ন কথা অন্যদের বলার পর রতি ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের স্বীকার হয়। স্ত্রীর আপত্তি সত্ত্বেও দুপুরে তাকে নিজেই নদীতে স্নান করাতে যায়। রতি প্রথমে ভয় ভয় করছিল তবে বিনা বাধায় স্নানের পর্ব শেষ হওয়ায় রতির মনের ভাবটা আপাতত কেটে যায়। তবে ভয়ের কারণ যে একেবারেই মিলিয়ে যায়নি সেটা বোঝা গেল বিকেলবেলা কাঁঠাল খেয়ে গায়ে মাখা মাখি করে পাচু। আবার তাকে নদীর ঘাটে স্নান করাতে যায়। স্নান শেষে পাচু জলের ধারে পড়ে থাকা ঘটটি আনতে যায়টি নিয়ে ফিরে দাঁড়াতেই নদীর জলে দুটি বড় বড় চোখ ভেসে ওঠে এবং জল আলোড়িত করে একটা কুমির পাঁচুকে জলে টেনে নেয় যখন ওপারের কাছাকাছি পাঁচুকে পুনরায় দেখা যায় তখন সে কুমিরের মুখে নিশ্চল। রতি যতই বাস্তব বোধসম্পন্ন হোক না কেন, নিয়তির বিধানকে অগ্রাহ্য করতে পারেনি। রতি নাপিতের পারিবারিক জীবনের ট্রাজেডি এখানেই চরম পরিণতি লাভ করে পূর্বের তিন পুত্রের মৃত্যুর মতই তার চতুর্থ পুত্রকে নদীগর্ভে যেতে হয়

 

গ) ‘কেবল পাচুর মা সে দৃশ্য দেখিল না

ক) পাচুর মায়ের নাম কী?

খ) পাচুর মা কেন সে দৃশ্য দেখতে পায়নি?

গ) সেই দৃশ্যটি কী তা বর্ণনা কর।

উত্তরঃ ক) পাঁচুর মায়ের নাম নারানী।

খ) পাঁচুর মা সে দৃশ্য দেখতে পায়নি; কারণ তখন সে মূর্ছা গিয়েছিল। গ) বিকেলের অবসরে পাঁচু তার বন্ধুদের সঙ্গে কাঁঠাল খেয়ে গায়ে মাখা মাখি করে। আবার তাকে নদীর ঘাটে স্নান করাতে যায়। স্নান শেষে পাচু জলের ধারে পড়ে থাকা ঘটটি আনতে যায়টি নিয়ে ফিরে দাঁড়াতেই নদীর জলে দুটি বড় বড় চোখ ভেসে ওঠে এবং জল আলোড়িত করে একটা কুমির পাঁচুকে জলে টেনে নেয় যখন ওপারের কাছাকাছি পাঁচুকে পুনরায় দেখা যায় তখন সে কুমিরের মুখে নিশ্চলপাচুর মুখের উপর অস্তগামী সূর্যের আলো ছিল, মনে হয়েছিল কুমির সূর্যকে ক্ষ নিবেদন করছে তারপর পাঁচুকে নিয়ে কুমির অদৃশ্য হয়ে যায় প্রথমে হতভম্ব হলেও পরে সম্বিৎ ফিরে পেয়ে আর্তনাদ করলে নদীতীর জনাকীর্ণ হয়ে ওঠে এই ভয়ঙ্কর দৃশ্যে নদী ঘাট কোলাহল পূর্ণ হয়ে উঠে।

 

ঘ) ‘রতি আরও শক্ত হইয়া বলিল – ‘না ওর ভুলটা ভাঙ্গাটা দরকার”।

ক) রতি কে?

খ) কার ভুলের কথা বলা হয়েছে পাঁচু সত্যিই কী কোনো ভুল করেছিল? যুক্তি দেখিয়ে উত্তর দাও

গ) ওর ভুলটা ভাঙার জন্য রতি কী কী করলো?

উত্তরঃ ক) রতি পাঁচুর পিতা ও নারানীর স্বামী

খ) এখানে পাঁচুর ভুলের কথা বলা হয়েছে না, পাঁচু এখানে কোনো ভুল করেনি কারণ পাঁচু একটি শিশু শিশু অসংলগ্ন কথা বলাটা একান্ত স্বাভাবিক ঘটনা সুতরাং শিশুর অসংলগ্ন কথাকে ভুল শুদ্ধের মাপকাঠিতে কখনো বিচার করা যায় না বড়দের কাছে যেটা ভুল, শিশুর জগতে সেটা একান্ত স্বাভাবিক

 গ) পাঁচু একদিন ঘুম থেকে উঠে তার মাকে বলেছিল - আজ তাকে কুমিরে নেবে এটা একটি অবিশ্বাস্য কথা পাঁচু এরকম অস্বাভাবিক কথা আগেও বলেছে প্রত্যেকের ঘরের শিশুরা এরূপ অনেক কথা বলে সেগুলি বড়দের বিচারের মানদণ্ড নিয়ে ভুল আখ্যা দিলে শিশুদের প্রতি অবিচার করা হয় তবে তি এবং অন্যান্যরা এটাকে পাঁচুর মনের ভুল হিসেবেই ধরে নিয়েছিল। পাঁচুর এই ভুল ভাঙ্গার জন্য পাঁচু ও তার মায়ের আপত্তি সত্ত্বেও তি প্রায় জোর করে কামদা নদীতে স্নান করাতে নিয়ে যায় কিছুটা ভয় ছিল তাই খুব সাবধানে সে নদীতে নামে পাঁচুকে হাঁটুর কাছে টেনে নিয়ে এক হাত দিয়ে ধরে অন্যহাতে স্নান করিয়ে দেয় তারপর পাঁচুকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এইভাবে রতি পাঁচুর ভুল ভাঙিয়ে দেয়।

 

ঙ) প্রসঙ্গ নির্দেশ করে ব্যাখ্যা লেখ

 ) ‘এই ক্ষুদ্র ঘটনায় এবং একটু হাসিতে পাইয়া রতির ভয়ে অভিভূত ভাবটা কাটিয়া গেল’।

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি জগদীশ গুপ্তের দিবসের শেষে গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে

কুমিরের ভয়ে শঙ্কিত রতি তার ছেলেকে নদীতে স্নান করাতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি শুশুক ডিগবাজি খেয়ে জলের তলায় মিলিয়ে যেতে দেখে পাঁচুর মনের ভয় কিছুটা কেটে যায়। এই ঘটনা প্রসঙ্গেই উদ্ধৃত কথাগুলি বলা হয়েছে

দিবসের শুরুতে পাঁচ বছরের ছোট্ট পাঁচু তার মা মাকে বলেছিল - আজ তাকে কুমিরে নেবে এ নিয়ে রতিকে নানা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ সহ্য করতে হয়েছে। কিছুটা শঙ্কিত হয়েই প্রায় জোর করে ছেলেকে স্নান করাতে নিয়ে যায় সেখানে চিরপরিচিত নদীর ভয়ঙ্কর রূপ দেখে কিছুটা আশঙ্কার জন্ম হয়। যে নদী তাদের সুপ্রিয় জল দান করেছে, আজ তার নিদারুণ নিষ্করুণ রূপ দেখে ভয় পেয়ে যায়। ঠিক ঐ সময় পাঁচু হঠাৎ কি একটা দেখে ভয়ে চিৎকার করে বাবাকে জড়িয়ে ধরে। রতি ছেলের এই ভয়ের কারণ অনুসন্ধান করে দেখে যে - একটি জলচর জানোয়ার হুস করে ভেসে ওঠে ডিগবাজি খেয়ে জলের তলায় মিলিয়ে যায় জন্তুটা ছিল একটা শুশুক মাছ তারা করে ধরার জন্যই সে এভাবে ডিগবাজি খেয়েছে পাঁচু এ কথা শোনার পর বিস্ময়ে বাবাকে প্রশ্ন করেছিলো - অন্ধকার জলের তলায় এরা কিভাবে মাছকে দেখতে পায় বাবা এসব কথা বুঝিয়ে দিলে ভয়ে কাতর ছেলের মুখে হাসি ফুটে ওঠে এই ক্ষুদ্র ঘটনাটি সারাদিন আশঙ্কায় কাতর বাবার মনটাকে একটু হালকা করে সে নিজেও একটু হাসতে পেরে স্বস্তি পায়।

 

) “সূর্যকে ভোগ নিবেদন করিয়া লইয়া কুম্ভীর পুনরায় অদৃশ্য হইয়া গেল”।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি ব্যতিক্রমী সাহিত্যিক জগদীশ গুপ্তের দিবসের শেষে গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে

পাঁচুকে কুমির নিয়ে যাওয়ার ঘটনা এখানে বর্ণিত হয়েছে

বিকেলের অবসরে পাঁচু তার বন্ধুদের সঙ্গে কাঁঠাল খেয়ে গায়ে মাখা মাখি করে। রতি আবার তাকে নদীর ঘাটে স্নান করাতে যায়। স্নান শেষে পাচু জলের ধারে পড়ে থাকা ঘটটি আনতে যায়টি নিয়ে ফিরে দাঁড়াতেই নদীর জলে দুটি বড় বড় চোখ ভেসে ওঠে এবং জল আলোড়িত করে একটা কুমির পাঁচুকে জলে টেনে নেয় যখন ওপারের কাছাকাছি পাঁচুকে পুনরায় দেখা যায় তখন সে কুমিরের মুখে নিশ্চলপাচুর মুখের উপর অস্তগামী সূর্যের আলো ছিল, মনে হয়েছিল কুমির সূর্যকে ক্ষ নিবেদন করছে তারপর পাঁচুকে নিয়ে কুমির অদৃশ্য হয়ে যায় প্রথমে হতভম্ব হলেও পরে সম্বিৎ ফিরে পেয়ে আর্তনাদ করলে নদীতীর জনাকীর্ণ হয়ে ওঠে এই ভয়ঙ্কর দৃশ্যে নদী ঘাট কোলাহল পূর্ণ হয়ে উঠে।

No comments

Powered by Blogger.