Header Ads

Header ADS

বোধ পরীক্ষণ পার্ট - ৫

বোধ পরীক্ষণ

 

খুব অল্পই পাওয়া গেছে। মিশুকে। সামাজিক। যদূর জানা গেছে, শত্রু নেই। আফ্রিকা থেকে যে জাহাজে ফিরেছেন, সে জাহাজেও শত্রু সৃষ্টির মতো কিছু করেননি। তবে হ্যাঁ, টংগু লিনচান নাম্বার ওয়ান লেডি কিলার। বউকে ডাইভোর্স করার আগে থেকেই লটঘট ছিল একটা মেয়ের সঙ্গে। কারবারের নাম করে নাকি তাকে নিয়েই পালিয়েছিলেন আফ্রিকায়। ফেরবার সময়ে ভদ্রমহিলাকে ফেলে এসেছেন। কলকাতাতেও তার এক প্রেয়সী আছে।

কাকে সন্দেহ হয়?

চিন্তাচ্ছন্ন চোখে বর্মী পর্যটকদের মৃতদেহর দিকে তাকিয়ে বলল জয়ন্ত–আজ সকালেই টংগু লিনচানের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল তার কলকাতার প্রেয়সী। নাম, ভায়োলেট অ্যালক্যাটরা। ভায়োলট চাকরি বাকরি করে না–অথচ ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের ফ্ল্যাটে রানির হালে থাকে। টংগু যখন ঢাকায়, তখন একবার এসে খোঁজ করে গেছিল ভায়োলেট। এনকোয়ারী কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জেনেছিল আজ সকালেই মিঃ লিনচানের ফেরার কথা। তাই ভায়োলেট এসেছিল এগোরোটা পাঁচে। রুম নাম্বার নীচ থেকে নিয়ে লিফটে করে উঠেছিল তিন তলায়। কখন বেরিয়ে গেছে কেউ জানে । দরজায় টোকা মেরে কারো সাড়া না পেয়ে চলে যায় ভায়োলেট। বাইরেও অপেক্ষা করেনি। টংগু লিনচানের সঙ্গে নাকি তার দেখাও হয়নি।

ঠিক এই সময়ে মৃতদেহের চুলের ডগা থেকে নখের ডগা পর্যন্ত তীক্ষ্ণদৃষ্টি বুলিয়ে নিয়ে খাটের কিনারায় বসে পড়ল কবিতা।

সবিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম চাপা উল্লাসের রোশনাই ওর তমালকালো দুই চোখে। তবে কি…তবে কি সূত্রের সন্ধান পেয়েছে কবিতা?

নিরীহ কণ্ঠে বলল ইন্দ্রনাথ–পা টন্ করছে বুঝি? কর্ণপাত না করে জয়ন্তকে জিগ্যেস করল কবিতা–বউ কী বলে?

বউ? টংগু যে আফ্রিকা থেকে ফিরে এসেছেন, তাই নাকি সে জানে না–দেখা হওয়া তো দূরের কথা। সকালে চৌরঙ্গিতে গেছিল সিনেমার টিকিট কিনতে।

গিন্নির তৎপরতায় আমার জড়তাও অন্তর্ধান করেছিল। জয়ন্তর কথা শুনতে শুনতে সন্ধানী চোখ বুলোচ্ছিলাম ঘরের এ-কোণ থেকে সে-কোণে–হঠাৎ পাওয়া কোনও সূত্রের আশায়।

ঘরটা আর পাঁচটা প্রথম শ্রেণির হোটেল ঘরের মতোই। বৈশিষ্ট্যহীন। সিঙ্গলবেড। ওয়ার্ডরোব। কাঁচের দেরাজ। নাইট টেবিল। চিঠি লেখার ডে। আর চেয়ার। স্রেফ ঘর সাজানোর জন্যে ডামি ফায়ারপ্লেস।–ওপরের তাকে টাইমপিস আর একারি বিভিন্ন স্বাদের ইংরেজি নভেল।

মৃতদেহের পাশে নতজানু হয়ে বসে পড়ল ইন্দ্রনাথ। ঘাড়খানা সারস পাখির মতো বাড়িয়ে ঝুঁকে পড়ল লম্বোদয়। তাই দেখে চেয়ারে বসতে বসতে ফিক করে হেসে ফেলল জয়ন্ত চৌধুরী।

মৃতদেহটাকে চিৎ করে শুইয়ে দিল ইন্দ্রনাথ। রাইগর মার্টিসে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তখন আড়ষ্ট হয়ে উঠেছে। হিমকঠিন দেহ আর পোশাকের ওপর দ্রুত হাত চালিয়ে নিয়ে বলল–বউদি, মৃগ, লম্বোদরবাবু। শুরু করা যাক এবার। বউদি, তুমিই আগে বলো। বলো কী দেখেছ?

টপ করে খাট থেকে লাফ দিয়ে নেমে এল কবি। বোঁ করে এক চক্কর ঘুরে এল লাশটাকে।

ইন্দ্রনাথ সকৌতুকে বললে–ব্যাপার কী? এখনও কিছু চোখে পড়ল না? এতদিন কি বৃথাই গপপো শোনালাম তোমাকে?

বাঁ-হাতে একটা রিস্টওয়াচ। আর…আর ঘড়ির কঁচটা চিড় খেয়ে গেছে। কাটা আর ঘুরছে না। দাঁড়িয়ে গেছে ১১-৫০ মিনিটের ঘরে।

চমকার! চমৎকার! জয়ন্ত, ডাক্তার কী বলে?

টংগু লিনচান মারা গেছেন এগারোটা থেকে সাড়ে এগারোটার মধ্যে। আমার মনে হয়—

জ্বলজ্বলে চোখে বলে উঠল কবিতা–তার মানে কি এই নয় যে–

ধীরে, ধীরে, বউদি। যদি কিছু মাথায় এসে থাকে, তবে তা মাথার মধ্যেই রাখো। ঝট করে সিদ্ধান্তে পৌঁছনো ভালো গোয়েন্দার লক্ষণ নয়। ব্যস, এবার তোমার ছুটি। লম্বোদরবাবু, আপনি কী দেখলেন?

লম্বোদরবাবু, আপনার মতো অ্যাপ্রেন্টিস পাওয়ায় আমি গর্বিত। ওহে, জয়ন্ত, রক্তমাখা হাতের ছাপ লাগা কিছু পেয়েছ ধারে কাছে?

কপাল কুঁচকে ইন্দ্রনাথ বলল–তুমি পরীক্ষক, পরীক্ষার্থী নয়। কাজেই আর ইঙ্গিত দিও না। মৃগ, তোমার কিছু বলার আছে?

তাড়াতাড়ি বললাম–মাথার ক্ষত দেখে মনে হচ্ছে ভারী কিছু দিয়ে বেশ কয়েকবার চোট মারা হয়েছে। বিছানার চাদরের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ধস্তাধস্তিও হয়েছিল। আর মুখটা

বটে! বটে! বটে! মুখটাও লক্ষ্য করে ফেলেছ? বলো দেখি কি দেখছ?

কাচুমাচু মুখে কবিতা বললে–মুখটা আমিও লক্ষ্য করেছিলাম ঠাকুরপো। কিন্তু কথাই বলতে দিল না…পাউডারটা লাগানো হয়েছে মসৃণভাবে। কোথাও বেশি, কোথাও কম নয়।

লাফিয়ে উঠে বলল ইন্দ্রনাথ-বউদি, তোমার শার্লক হোমস্ হওয়া রোখে কে। জয়ন্ত, অস্ত্র পাওয়া গেছে?

 

 

১। ঙ্গু লিনচানেপ্রেয়সীর নাম কী?

ক) ভায়োলেট আলকাতরা           খ) কবিতা

গ) রুজিন লিনচান                  ঘ) মিসেস লিনচান

২। কে মৃতদেহটার পাশে নতজানু হয়ে বসেছিল আর কে চিত করে শুইয়ে দিয়েছিল?

ক) জয়ন্ত চৌধুরী ইন্দ্রনাথ        খ) ইন্দ্রনাথ

গ) লম্বোদর ও জয়ন্ত চৌধুরী        ঘ) ঙ্গু লিনচান ও সার্জেন্ট

৩। ঘড়ির কাঁটা থেমে গেছে

ক) ১২:৩০ মিনিটে           খ) ৯:৫০ মিনিটে

গ) ১১:৫০ মিনিটে           ঘ) ১০:৫৭ মিনিটে 

৪। ভালো গোয়েন্দার বৈশিষ্ট্য নয়

ক) পর্যবেক্ষণ করা           খ) তথ্য ঝালিয়ে নেওয়া

গ) অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সঠিক সময়ে ধরে ফেলা

ঘ) তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া

৫। গদ্যাংশে অ্যাপ্রেন্টিস কে ছিলেন?

ক)ম্বোদর                 খ) জয়ন্ত বাবু       

গ) মি. লিনচান              ঘ) ইন্দ্রনাথ

৬। কত হেরিলাম মনোহর ধাম।  উদ্ধৃত অংশটির নিম্নরেখ ক্রিয়াপদের কাল

ক) সাধারণ অতীত          খ) পুরাঘটিত অতীত

গ) বর্তমান অনুজ্ঞা           ঘ) ঘটমান বর্তমান

৭। কোন বাক্যটি গঠনগত দিক থেকে ভুল আছে?

ক) সেদিনের সভায় অজস্র লোক আসিয়াছে।

খ) সেখানে আমাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।

গ) আলাচ্যমান অংশটি রবীন্দ্রনাথের কবিতা থেকে গৃহিত।

ঘ) অপমানিত হবার ভয়ে আমরা আর তার কাছে যাইনি।

৮। অতৎসম স্থান নামের বানানে কোনটি সঠিক নয়?

ক) নদীয়া>নদিয়া            খ) দীঘা>দিঘা

গ) মেমারী>মেমারি           ঘ) রানাঘাট>রাণাঘাট 

৯। শব্দের প্রথমে সম্‌-উপসর্গ থাকলে ‘অ’ এর উচ্চারণ হয় –

ক) প্রকৃত            খ) লুপ্ত

গ) বিকৃত            ঘ) কোনটিই নয়।

 




এই শহরে ইট পাথরে
ঘামের গন্ধ বৈ কিছু নেই,
ব্যস্ত নিয়ম থরে থরে
জীবন মানে যেই কে সেই,
হাই দিয়ে ঘুম ভাঙ্গে ভোরে
চায়ের কাপে চুমুক দেই,
ব্যাগ নিয়ে যাই বিগ বাজারে
দাম শোনে রোজ হারাই খেই,
এই শহরে ইট পাথরে
ঘামের গন্ধ বৈ কিছু নেই,
সকাল বিকাল আপিস করে
হাপিয়ে যাই সন্ধ্যে হলেই,
রাত কেটে যায় ঘুমের ঘোরে
মনে থাকেনা কাউকেই ।

এই দেশেতে হরেক মানুষ
হরেক পেশা হরেক দোষ,
দুধ বেচে কেউ অসুদ খায় তো
কেউ শুধু চায় ঘোষ !
কেউবা বেশী খেয়ে খেয়ে
মরণ পথ যাত্রী,
কেউবা আবার অনাহারে
কাটায় দিন রাত্রি !
কারো ঘরে নেইকো আলো
কারো জ্বলে ঝাড়বাতি,
কারো মাথায় নেইকো ছাদ
কারোর ঘরে শূন্য অতি ।

এই শহরে ইট পাথরে
ঘামের গন্ধ বৈ কিছু নেই,
রোদের ঝিলিক দুর পাহাড়ে
চাঁদের বুড়ি রাতে নেই,
এই শহরে আকাশ গড়ে
রেডিয়াম ষ্টিকারেই,
মানুষের মূল্যায়ন করে
অর্থের বিকারেই,
এই শহরে বসত করে
পৃথিবীর মানুষেই,
গ্রাম-শহরের তফাৎ করে
ব্যস্ততার নিরিখেই ।


১। ‘বৈ’ শব্দের অর্থ কী?

ক) ভিন্ন             খ) ছাড়া

গ) উভয়ই           ঘ) কোনোটিই নয়।

২। দাম শোনে রোজ হারাই খেই, - গ্রিক শব্দ কোনটি?

ক) দাম (গ্রীক দ্রাখ্‌মে অর্থ মূল্য/ সং দমন্‌ অর্থ মালা/গুচ্ছ কেশদাম)

খ) শোনে (তদ্ভব)     গ) খেই (সং ক্ষেপ>খেঅ>খেই)      ঘ)  হারাই (ক্রিয়া)

৩। ‘কেউ শুধু চায় ঘোষ’ - কেউ কোন শ্রেণীর সর্বনাম?

ক) অনির্দিষ্টতা জ্ঞাপক সর্বনাম

খ) নির্দিষ্টতা জ্ঞাপক সর্বনাম

গ) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম

ঘ) নির্দেশ বাচক সর্বনাম

৪। কবি বিগ বাজারে কী নিয়ে যান?

ক) টাকা             খ) প্রেমিকা

গ) বাচ্চা             ঘ) ব্যাগ

৫। কীসের ভিত্তিতে গ্রাম শহরের তফাৎ ঘটে?

ক) ব্যস্ততার নিরিখে                খ) অর্থ সম্পদের নিরিখে

গ) সভ্যতা সংস্কৃতির নিরিখে         ঘ) বাড়ি-ঘরের নিরিখে

৬। মানুষের মূল্যায়ন কীসের মাধ্যমে হয়?

ক) স্ট্যাটাস দেখে           খ) অর্থ বিকৃতিতে

গ) রেডিয়াম স্টিকারে        ঘ) ঘামের গন্ধে

No comments

Powered by Blogger.