Header Ads

Header ADS

বোধ পরীক্ষণ পার্ট - ৪

 বোধ পরীক্ষণ 

পার্ক স্ট্রিট। রাঁদেভু হোটেল।

লবিতে গিজগিজ করছে পুলিশ, রিপোর্টার আর হোটেল-গেস্ট। কনক্রিট দেওয়ালের মতো পথ আটকে দাঁড়িয়ে সার্জেন্ট অচল দত্তর বিপুল দেহ। পাশেই দাঁড়িয়ে খর্বকায় এক পুরুষ। উদ্বেগের কালো ছাপ চোখে-মুখে। পরনে নেভী ব্লু সার্জ সুট, সাদা শার্ট আর কালো বোটাই।

সপারিষদ ইন্দ্রনাথকে দেখে একগাল হেসে পার্শ্ববর্তী ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিলে অচল দত্ত–মিঃ পিটার ড্যানিয়েল। হোটেল ম্যানেজার।

কাষ্ঠ হেসে করমর্দন করল পিটার ড্যানিয়েল। বলল–ব্যাড। ভেরী ব্যাড। আপনি পুলিশের লোক?

এমনভাবে মাথা নাড়ল ইন্দ্রনাথ যাতে হা-না দুই বোঝায়। লম্বোদরের মুখটা দেখলাম একটু শুকিয়ে গেছে পুলিশ দেখে। ফ্ল্যাশগান বাগিয়ে সাংবাদিকরা তাগ করছে, সুযোগ বুঝলেই শাটার টিপবে। একই রকম ধূসর রঙের শার্ট, প্যান্ট, টাই পরা হোটেল ক্লার্ক আর অন্যান্য কর্মচারীরা একযোগে প্যাট-প্যাট করে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। সব মিলিয়ে এমন একটা থমথমে পরিবেশ যে অস্বস্তি বোধ না করে উপায় নেই।

অচল দত্ত বললে–লাশ চোখে পড়ার পর থেকে কেউ বাইরেও যায়নি, ভেতরেও আসেনি। ইন্সপেক্টর চৌধুরীর অর্ডার। এঁরা আপনার সঙ্গে যাবে তো?

হ্যাঁ। জয়ন্ত কোথায়?

তিন তলায়। রুম নং ১০৯।

পা বাড়াল ইন্দ্রনাথ। কয়েক ধাপ উঠে এসে মুচকি হেসে বললে–চলো হে গোয়েন্দারা। এখনি নার্ভাস হলে চলবে কেন?

কবিতা কিছু বলল না। তবে মুখ দেখে বুঝলাম সহজ হবার চেষ্টা করছে বেচারি।

১০৯ নাম্বার কামরার সামনেই পেছনে হাত দিয়ে পায়চারি করছিল ডিটেকটিভ জয়ন্ত চৌধুরী–আমাদের বাল্যবন্ধু।

জয়ন্তর ললাট চিন্তাকুটিল। কবিতাকে দেখে জাকুটি করে বললে–কী ব্যাপার, একেবারে সদলবলে যে। লম্বোদরকে লক্ষ্য করে–ইনি কে?

আমার অ্যাপ্রেন্টিস৷ বলল ইন্দ্রনাথ।

অ্যাপ্রেন্টিস? তার মানে?

তার মানে শিক্ষার্থী। মৃগ আর বউদিকেও তাই বলতে পারো। এইটাই হল টেস্ট-কে। বোর্ড অফ এগজামিনারের মধ্যে থাকছ তুমি আর আমি।

ললাট রেখা সরল হয়ে গেল জয়ন্তর। এত চিন্তার মধ্যেও ফিক্‌ করে হেসে বললে–বেশ তো, ভেতরে চলো।

চোখ পাকিয়ে তাকাল কবিতা। আমারও প্রবল বাসনা হল দুকথা শুনিয়ে দেওয়ার। কিন্তু স্থান-কাল-পাত্র ভেবে মুখ বুজে রইলাম।

না থেকেও উপায় ছিল না। কেননা ঘরের মধ্যে যে দৃশ্য দেখলাম, তা দেখামাত্র শিরশির করে উঠল আপাদমস্তক।

পুরু কার্পেটের ওপর মুখ থুবড়ে পড়ে এক ব্যক্তি। দু-হাত ছড়ানো দুপাশে–সাঁতারুর মতো। কে যেন এক বালতি লাল রং ঢেলে দিয়ে গেছে মাথার ওপর…লাল রং জমাট বেঁধেছে কালো চুলে…গড়িয়ে এসেছে ঘাড় বেয়ে।

নিষ্প্রাণ নিস্পন্দ দেহটির দিকে দেখলাম বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে লম্বোদয় লস্কর।

আর কবিতা? মৃত ব্যক্তির পাশে রক্ষিত শয্যার সাদা চাদরের চাইতেও বুঝি সাদা হয়ে গেছে তার মুখ। রক্তহীন। রংহীন।

এ হেন বীভৎস দৃশ্যের প্রতিক্রিয়া নিশ্চয় আমার মুখেও দেখা গিয়েছিল। তাই আমাদের তিনজনের মুখের ওপর দৃষ্টি বুলিয়ে নিয়ে বিলক্ষণ হৃষ্টচিত্তে বলল ইন্দ্রনাথ রুদ্র–বন্ধু জয়ন্ত, নাম-ধামগুলো এবার বলে ফেলো দিকি।

নাম, টংগু লিনচান। বয়স বিয়াল্লিশ। বার্মিজ খ্রিস্টান। বিয়ে হয়েছিল কলকাতায়। স্ত্রীর সঙ্গে ডাইভোর্স হয়েছে বছর দুই আগে। রিপ্রেজেন্টেটিভ। মালিকের চাল আর কাঠের কারবার আছে মান্দালয়ে। বছরখানেক সাউথ আফ্রিকায় ছিলেন। নেটিভদের মারধোর করায় বিতাড়িত হয়েছেন ব্রিটিশ আফ্রিকা থেকে। রাঁদেভু হোটেলে নাম লিখিয়েছেন হপ্তা খানেক আগে। দিন তিনেকের জন্যে ঢাকায় গিয়েছিলেন আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে। আজ সকালেই ফিরেছেন। সাড়ে নটার সময়ে হোটেলে ঢুকেছেন। বারোটা পাঁচে মরে পড়ে থাকতে দেখেছে পারুল।

 

১। ‘কয়েক ধাপ উঠে এসে মুচকি হেসে বললে–চলো হে গোয়েন্দারা। কার কথা বলা হয়েছে?

ক) পার্শ্ববর্তী ভদ্রলোক       খ) কবিতা

গ) ইন্দ্রনাথ                  ঘ) পারুল

২। লেখক কী ভেবে মুখ বুজে রইলেন?

ক) গিজগিজ করছে ভেবে           খ) দেখামাত্র শিরশির করছে করে উঠল ভেবে

গ) করমর্দন করলো ভেবে           ঘ) স্থান কাল পাত্র ভেবে

৩। ‘এ হেন বীভৎস দৃশ্যের প্রতিক্রিয়া নিশ্চয় আমার মুখেও দেখা গিয়েছিল। প্রতিক্রিয়াটি ছিল

ক) নিষ্প্রাণ           খ) অচল

গ) রক্তহীন           ঘ) বিবর্ণ

৪। টংগু লিনচান কোথায় গিয়েছিলেন

ক) ঢাকায়            খ) সাউথ আফ্রিকায়

গ) পার্ক স্ট্রিটে       ঘ) রাঁদেভূ হোটেলে

 

৫। নিষ্প্রাণ নিস্পন্দ দেহটি কার?

ক) ইন্দ্রনাথের        খ) কবিতার

গ) টঙ্গু লিনচানের     ঘ) রিপোর্টারের

 

৬। বিছিয়ে শব্দের অর্থ নয় কোনটি?

ক) পাতান           খ) পাতানো

গ) মেলানো          ঘ)  বিছিয়ে নেওয়ানো

৭। বাংলায় সম্মুখ স্বরধ্বনিটি হল –

ক) ই         খ) উ         গ) অ        ঘ) ও

৮। তবে মুখ দেখে বুঝলাম সহজ হবার চেষ্টা করছে বেচারি। - উদ্ধৃত বাক্যটির উদ্দেশ্য হল

ক) মুখ              খ) সহজ

গ) হবার চেষ্টা        ঘ) বেচারি

৯। কোনটি শুদ্ধ

ক) নিরোগ           খ) তরুছায়া

গ) বয়ঃকনিষ্ঠ        ঘ) মনোকষ্ট

 



কিন্তু কোথায় আজ, সেই বাঙ্গালী জাতির ঐতিহ্য?  
বাংলার রূপবৈচিত্র, বাংলার হাস্যজ্জ্বল রূপ?
কোথায় সেই? জারি,সারি,ভাটিয়ালি,পল্লী,লোকগীতি,
  
পালা,যাত্রা,কবি,অস্টক,মঙ্গল শোভাযাত্রা?

 

সেদিনের সেই পাক শাসকের জুলুম,
সোনার বাংলার সোনার সম্পদের লুট।
তাদেরই কি ছিলো শুধু লালসার দোস?
আজও কি হচ্ছে না? সোনার বাংলার সোনার সম্পদের লুট?
এই বাংলার কৃষক,শ্রমিক,সাধারণ,মধ্যবিত্তের কষ্টার্জিত সম্পদের লুট?
বুঝলনা কিছু ক্ষমতা লোভী!

 

লাখো শহীদের রক্ত, সপরিবারে তোমার বলিদান,
সবই ছিলো বাংলার শান্তি, দিয়ে গেলে অধিকার।
তবু তারা আজও বুঝলো না তোমার স্বপ্ন স্বাধিকার?
নিজের সুখ লালসায়,বাংলার সম্পদ নিয়ে তারা,
  
নিজের দেশকে ঠকিয়ে, দিচ্ছে অন্যের দেশ পাড়ি।
কি দরকার ছিলো তবে এই স্বাধীনতার?

 

মায়ের কোলে জন্ম নিয়ে, মায়ের আঁচল তলে বড় হয়ে,
মাকেই তারা অবহেলায় রেখে, অন্যের মাকে বলছে তারা মা।
হায়রে আমার মা জননী, মাতৃভূমী মাংলা মা!
  
তোমার আর্তনাদ দেখবার যে আজ, আর যে কেউ নেই?
যে ছিলো তোমার সন্তান, সে যে আর নেই গো মা!

ওগো আমার মাতৃভূমী মা, কেঁদো না মা, না কেঁদো না তুমি।
তোমার আর্তনাদ হাহাকারের কান্না মোচনে,
  
আজও বেঁচে আছে তোমারই আদর্শের উত্তরসূরি।
  

 

১। কোনটি আলাদা?

ক) জারি      খ) সারি

গ) ভাটিয়ালি ঘ) যাত্রা

২। কার কষ্টার্জিত সম্পদের লুট করা হয়েছে?

ক) কৃষক     খ) শ্রমিক

গ) মধ্যবিত্ত    ঘ) সাধারণের

৩। কীসের নেশায় অন্যের দেশ বাড়ি পাড়ি দিচ্ছে?

ক) নিজের সুখ লালসায়      খ) ভ্রমণ পিপাসায়

গ) অধিকার না থাকায়       ঘ) দেশে সম্পদ না থাকায়

৪। ‘কি দরকার ছিল তবে এই স্বাধীনতার?’বাক্যটি ইতিবাচক হলে নেতিবাচক রূপটি কী হবে?

ক) দরকার ছিল না তবে এই পরাধীনতার

খ) দরকার ছিল না তবে এই স্বাধীনতার

গ) স্বাধীনতার কোনো দরকার নেই

ঘ) তবে পরাধীনতার দরকার ছিল

৫। ‘ঠকিয়ে শব্দের বিপরীত অর্থ লেখ।

ক) জিতিয়ে          খ) শঠতায়

গ) ধূর্তামি            ঘ) হারিয়ে

৬।  শেষ স্তবকে কয়টি পূর্ণাঙ্গ বাক্য আছে?

ক) ২         খ) ৩

গ) ৪         ঘ) ৫

No comments

Powered by Blogger.