বোধ পরীক্ষণ পার্ট - ৩
বোধ পরীক্ষণ
৩
মহাসমুদ্রের শত
বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিতে পারিত যে, সে ঘুমাইয়া পড়া শিশুটির মতো চুপ করিয়া থাকিত, তবে
সেই নীরব মহাশব্দের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত। এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে,
প্রবাহ স্থির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক
কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে। ইহারা সহসা যদি বিদ্রোহী
হইয়া উঠে, নিস্তব্ধতা ভাঙিয়া ফেলে, অক্ষরের
বেড়া দগ্ধ করিয়া একেবারে বাহির হইয়া আসে! হিমালয়ের মাথার উপরে কঠিন বরফের
মধ্যে যেমন কত কত বন্যা বাঁধা আছে, তেমনি এই লাইব্রেরির
মধ্যে মানবহৃদয়ের বন্যা কে বাঁধিয়া রাখিয়াছে!
বিদ্যুৎকে মানুষ
লোহার তার দিয়া বাঁধিয়াছে, কিন্তু কে জানিত মানুষ শব্দকে
নিঃশব্দের মধ্যে বাঁধিতে পারিবে। কে জানিত সংগীতকে, হৃদয়ের
আশাকে, জাগ্রত আত্মার আনন্দধ্বনিকে, আকাশের
দৈববাণীকে সে কাগজে মুড়িয়া রাখিবে। কে জানিত মানুষ অতীতকে বর্তমানে বন্দী করিবে।
অতলস্পর্শ কালসমুদ্রের উপর কেবল এক-একখানি বই দিয়া সাঁকো বাঁধিয়া দিবে।
লাইব্রেরির
মধ্যে আমরা সহস্র পথের চৌমাথার উপরে দাঁড়াইয়া আছি। কোনো পথ অনন্ত সমুদ্রে
গিয়াছে,
কোনো পথ অনন্ত শিখরে উঠিয়াছে, কোনো পথ
মানব-হৃদয়ের অতল স্পর্শে নামিয়াছে। যে যে দিকে ইচ্ছা ধাবমান হও, কোথাও বাধা পাইবে না। মানুষ আপনার পরিত্রাণকে এতটুকু জায়গার মধ্যে
বাঁধাইয়া রাখিয়াছে।
শঙ্খের মধ্যে
যেমন সমুদ্রের শব্দ শুনা যায় তেমনি এই লাইব্রেরির মধ্যে কি হৃদয়ের উত্থানপতনের
শব্দ শুনিতেছ? এখানে জীবিত ও মৃত ব্যক্তির হৃদয় পাশাপাশি এক পাড়ায়
বাস করিতেছে। বাদ ও প্রতিবাদ এখানে দুই ভাইয়ের মতো একসঙ্গ থাকে। সংশয় ও বিশ্বাস,
সন্ধান ও আবিষ্কার এখানে দেহে দেহে লগ্ন হইয়া বাস করে। এখানে
দীর্ঘপ্রাণ ও স্বল্পপ্রাণ পরম ধৈর্য ও শান্তির সহিত জীবনযাত্রা নির্বাহ করিতেছে,
কেহ কাহাকেও উপেক্ষা করিতেছে না।
কত নদী সমুদ্র
পর্বত উল্লঙ্ঘন করিয়া মানবের কণ্ঠ এখানে আসিয়া পৌঁছিয়াছে কত শত বৎসরের প্রান্ত
হইতে এই স্বর আসিতেছে। এসো এখানে এসো, এখানে আলোকের জন্ম সংগীত
গান হইতেছে।
অমৃতলোক প্রথম
আবিষ্কার করিয়া যে যে মহাপুরুষ যে-কোনোদিন আপনার চারি দিকে মানুষকে ডাক দিয়া
বলিয়াছিলেন তোমরা সকলে অমৃতের পুত্র, তোমরা দিব্যধামে বাস
করিতেছ, সেই মহাপুরুষদের কণ্ঠই সহস্র ভাষায় সহস্র বৎসরের
মধ্য দিয়া এই লাইব্রেরির মধ্যে প্রতিধ্বনিত হইতেছে।
১। মহা সমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোলের সাথে কীসের তুলনা
করেছেন?
ক) মানবাত্মার খ) আলোকের
গ) লাইব্রেরির ঘ) সংগীতের
২। ‘সহস্র পথের চৌমাথা – বলতে কী বোঝান হয়েছে?
ক) বহু জ্ঞানের সম্মিলন খ) বহু হৃদয়ের সম্মিলন
গ) বহু রাস্তার সম্মিলন ঘ) বহু জীবনের সম্মিলন
৩। অতলস্পর্শ কালসমুদ্রের উপর কী দিয়ে সাঁকো বেধে দিবে?
ক) বাঁশ দিয়ে খ) বই দিয়ে
গ) কাঠ দিয়ে ঘ) লোহা দিয়ে
৪। মানুষ কাগজে মুড়িয়ে রাখবে
ক) সংগীতকে ও হৃদয়ের আবেগকে,
খ) জাগ্রত আত্মার আনন্দধ্বনিকে ও আকাশের দৈববাণীকে
গ) সংগীতকে, হৃদয়ের আশাকে, জাগ্রত আত্মার আনন্দধ্বনিকে, আকাশের দৈববাণীকে
ঘ) উপরের সবকটিকে
৫) দেহে দেহে লগ্ন নিয়ে বাস করে
ক) সংশয় ও বিশ্বাস, খ) সন্ধান ও আবিষ্কার
গ) উভয়েই ঘ) কোনোটিই নয়।
৬। মহাপুরুষদের কণ্ঠ ধ্বনিত হয়
ক) বইয়ে খ) সংগীতে
ঘ) অমৃতলোকে ঘ) লাইব্রেরিতে
৭। কারা বিদ্রোহী হয়ে অক্ষরের বেড়া দগ্ধ করে একেবারে
বাইরে বেড়িয়ে আসে?
ক) ধ্বনি খ) অক্ষর
গ) মানবাত্মা ঘ) কালসমুদ্র
৮। মানবাত্মা শব্দটির বর্ণবিশ্লেষণ কর।
ক) ম্+আ+ন্+অ+ব্+আ+ত্+ম্+আ খ) ম্+আ+ন্+অ+ব্+আ+ত্+ত্+আ
গ) ম্+আ+ন+অ+ব্+আ+ত্+ম্+আ ঘ) ম্+আ+ন্+অ+ব্+আ+ত্+ম্+আ
৯। এখানে আলোকের জন্ম সংগীত গান হইতেছে। জন্ম শব্দটির
শ্রেণি নির্ণয় কর।
ক) তৎসম খ) অর্ধ- তৎসম
গ) দেশি ঘ) বিদেশি
৪
এমন একটি সময় সম্মুখ সাড়িতে,
জীবনের পঁয়তাল্লিশটি বছর পেড়িয়ে
ছেচল্লিশে পদার্পণ করেছি আজ।
জীবন চলার পথে আনন্দ-হাসি
সুখ-দুঃখ, রাগ-অভিমান, হিংসা-বিদ্বেষ,
লোভ-লালসা, লোক ঠকানো কত কি!
কি হবে? ভেবেই পাইনা নিজের অস্তিত্ত কোথায়?
শৈশবে বাবার হাত ধরে হাটতে শিখেছি।
মায়ের মমতাময় স্নেহ-আদরে বড় হয়েছি।
শিক্ষা গুরুর স্বান্বিধ্যে শিক্ষা-জ্ঞান লাভ করেছি।
পরিবারের পারিবারিক শিক্ষা,সংস্কৃতি, সংস্কার
মস্তিষ্কে ধারণ করে সামনে এগিয়েই চলেছি।
পরিবার,সমাজ,গ্রাম,শহর,নগর,মহানগর,
রাজনীতি,সমাজনীতি,রাষ্ট্রনীতি,ধর্মনীতি,
সমস্তনীতি দেখতে-শুণতে আজ মনে শুধু একটা প্রশ্ন?
কোথায় এই মহাজাগতিক সুখের ঠিকানা?
উত্তর মেলেনা, হতাশার অসহায় দারিদ্রতা।
সংসার সুখের মহাসমারোহে জ্যেষ্ঠোর
দিবা-নিশি চিন্তা-চেতনার ক্লান্তির ললাটের ভাঁজ।
সমাজের সমাজপতির আধিপত্তের তান্ডব লীলা,
অসহায় ছিন্নমূলের আর্তনাদের বুকচাঁপা কান্না!
রাজনীতির ক্যানভাসে নিজের লালসা মেটাতে,
অসহায় সাধারণ জনমানুষের বিপন্ন জীবন।
১। কবিতাংশটিতে কয়টি দ্বন্দ্ব সমাসবদ্ধ পদ আছে?
এমন একটি সময় সম্মুখ সাড়িতে,
জীবনের পঁয়তাল্লিশটি বছর পেড়িয়ে
ছেচল্লিশে পদার্পণ করেছি আজ।
জীবন চলার পথে আনন্দ-হাসি
সুখ-দুঃখ, রাগ-অভিমান, হিংসা-বিদ্বেষ,
লোভ-লালসা, লোক ঠকানো কত কি!
ক) ৬ খ) ৫ গ)
৪ ঘ) ৭
২। প্রথম স্তবকে কয়টি নির্দেশক আছে?
ক) ২ খ) ৩ গ) ৪ ঘ) ৫
৩। অসহায়
ছিন্নমূলের আর্তনাদের বুকচাঁপা কান্না! - ‘বুকচাঁপা কান্না’ কোন শ্রেণীর পদ?
ক) বিশেষ্য খ) বিশেষণ
গ) ক্রিয়া ঘ) সাধিত ক্রিয়া
৪। ‘সামনে এগিয়ে চলেছি’ - কী ধারণ করে?
ক) পারিবারিক শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সংস্কার
খ) পারিবারিক শিক্ষা ও মানসিকতা
গ) পারিবারিক সংস্কার ও মানসিকতা
ঘ) যন্ত্রযুগের মধ্যদিয়ে
৫। আজ মনে শুধু একটা প্রশ্ন জাগে। - প্রশ্নটা কী?
ক) হতাশার অসহায় দারিদ্রতা
খ) মমতাময় স্নেহ আদরে বড় হওয়া
গ) মহাজাগতিক সুখের ঠিকানা
ঘ) সাধারণ জন মানুষের বিপন্ন জীবন
৬। কবি কার হাত ধরে হাঁটতে শিখেছেন?
ক) মায়ের খ) বাবার
গ) শিক্ষক ঘ) পরিবারের
No comments