লোকমাতা রানি রাসমণি : সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
লোকমাতা রানি রাসমণি
সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
লেখক পরিচিতিঃ
সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৪ - ৮ এপ্রিল ১৮৮৯ সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায় তার ছোট ভাই। ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম বাংলা প্রবন্ধ যাত্রা প্রকাশিত হয়। ভ্রমর নামক মাসিক পত্রিকায় রামেশ্বরের
অদৃষ্ট নামক তার প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়, যা ১৮৭৭ খ্রিস্তাব্দে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম
উপন্যাস কণ্ঠমালা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
উপন্যাস
·
কণ্ঠমালা (১৮৭৭)
·
মাধবীলতা (১৮৮৪)
·
জালপ্রতাপ চাঁদ (১৮৮৩)
ভ্রমণকাহিনী
·
পালামৌ
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
Ø রাসমণি
পিতা হারু ঘরামী।প্রকৃত নাম হরেকৃষ্ণ দাস।
Ø মাতা
রামপ্রিয়া।
Ø রামমনির
জন্ম হালিশহরে মাহিষ্য বংশে, দরিদ্র পরিবারে বুধবার
জন্মগ্রহণ করে।
Ø মাতা
রামপ্রিয় রানী নাম রেখেছিলেন। পরে হয়েছিলেন রাসমণি।
Ø গ্রামবাসীরা
দুটো নামে একত্র করে নাম দিয়েছেন রাণী রাসমণি।
Ø পিতা
হারু ঘরামি,
প্রকৃত নাম হরেকৃষ্ণ দাস। লোকমুখে হারু হয়েছেন।
সামান্য লেখাপড়া জানতেন মেয়েকেও (রাসমণি)
লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন।
Ø গ্রামে
একমাত্র তাদের বাড়িতে রামায়ণ, মহাভারত,
পুরাণ পাঠ করা হত।
Ø গ্রামবাসীরা
লন্ঠন হাতে শুনতে আসত” - সে এক অপূর্ব দৃশ্য।
Ø প্রীতিরাম
দাস ১৭৫৩ সালে এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম করেন।
Ø গুরু
মহাশয়ের কাছে বাংলা ভাষা ও গণিত শিখেছিলেন।
Ø ১৪
বছর বয়সে তার পিতা মাতা দুজনেই মারা যায়।
Ø প্রীতিরামের
দুই ভাই রামতনু ও কালীপ্রসাদ।
Ø হরচন্দ্র
নিঃসন্তান স্ত্রীকে রেখে খুব তাড়াতাড়ি মারা যান।
Ø ১৮০২
সালে রাজচন্দ্রের বিয়ে হয়।
Ø ১৮০২
সালে তার প্রথম স্ত্রী মারা যায়।
Ø ১৮০৩
সালে আবার বিয়ে করলে বিয়ের বছরেই দ্বিতীয় স্ত্রী মারা যায়।
Ø তৃতীয়
স্ত্রী হিসেবে রাজমণিকে বিয়ে করেন।
Ø ১৮১৩
সালে প্রীতিরাম জানবাজারের সর্ববৃহৎ আবাস নির্মাণের
কাজ শুরু করেন।
Ø ১৮১৭
সালে ৬৪ বছর বয়সে প্রীতিরাম দাস মারা যান।
Ø মৃত্যুর
সময় তার সম্পত্তির পরিমাণ ছিল সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা।
Ø ১৮১৯
সালে রাসমণি একটি মৃত পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন।
Ø ১৮৩০
সালে ১৯ চতুর্থ কন্যা জগদম্বার জন্ম হয়।
Ø ১৮৩১
সালে তৃতীয় কন্যা করুণাময়ী মারা যায়।
Ø করুণাময়ী
স্বামী মথুরামোহন বিশ্বাস ও একমাত্র পুত্র গোপাল চন্দ্র।
Ø ১৮৩৩
সালে রাজচন্দ্র চতুর্থ কন্যা জগদম্বার সঙ্গে মথুরামোহন
বিশ্বাসের বিয়ে দিলেন।
Ø মথুরামোহন
রামকৃষ্ণের একনিষ্ট ভক্ত ছিলেন।
Ø রাসমনির
স্বামী পারলৌকিক স্বার্থে খরচ করেন ৫৫ হাজার টাকা খরচ করেন।
Ø শুধু
জানবাজারে নয় সমগ্র বঙ্গে শুরু হয় রাসমণি যুগ।
Ø রাসমণি
স্পষ্টবক্তা, বিচক্ষণ, ক্ষাত্রতেজে পূর্ণ,
দুর্দান্ত সাহসী, কূটকৌশলী নারী।
Ø নড়াইলের
জমিদারের নাম রাম রতন রায়।
Ø স্বরূপপুর পরনার
বার্ষিক আয় ছিল ৩৬ হাজার টাকা।
Ø ১৮৫৭
সাল সিপাহী বিদ্রোহের কাল।
Ø ১৮৫৭
সালে ২৯ মার্চ ব্যারাকপুরে ক্যান্টনমেন্টে সিপাহী মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে
বিদ্রোহীরা আন্দোলন করেন।
Ø ১৮৫৮
সালে ইংল্যান্ডের শরীর ভিক্টোরিয়া ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ করেন।
Ø সব
কাজের সেরা কাজ দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির স্থাপন।
Ø দক্ষিণেশ্বর
কালী মন্দিরে ঘটেছে বাংলার নবজাগরণ।
Ø বারানসি
যাওয়ার জন্য কলকাতার ঘাটে ২৫ টি বজরা সাজানো ছিল।
Ø জমির
পরিমান ছিল সাড়ে ৫৪ বিঘা।
Ø জমিটি
৪২ হাজার ৫০০ টাকা কেনা হয়।
Ø জমিটির
পূর্ব দিকে কাশিনাথ চৌধুরীর জমি।
Ø জমিতে
বাগান ছিল। বাগানের নাম ছিল সাহেবান বাগিচা।
Ø মন্দির
১৮৪৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জমিটি কেনা হয়।
Ø ১৮৪৭
সালের মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিলাতি সংস্থা
ম্যাকিনটস এন্ড বার্ন কে।
Ø মন্দির
নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৮৫৪ সালে।
Ø শাস্ত্রমতে
মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৫৫ সালে ৩১ মে।
গদ্যাংশ
বিষয়বস্ত
সঞ্জীবচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায় লেখা ‘লোকমাতা রানী রাসমণি’
গদ্যাংশটি রাসমনির জীবন বৃত্তান্ত। বুধবার সকালে
হালিশহরে মাহিষ্য বংশে এক দরিদ্র
পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা হরেকৃষ্ণ দাস।
মাতা রামপ্রিয়া। অপূর্ব সুন্দরী মেয়ের নাম রানী রাখলেও
পরে গ্রামবাসীরা নাম দিয়েছে রানী রাসমণি।
তাকে কেন্দ্র করে শুধু জানবাজারে নয় সমগ্র বঙ্গে রাসমণি যুগ
শুরু হয়। তিনি স্পষ্টবক্তা, বিচক্ষণ,
দুর্দান্ত সাহসী, কূটনৈতিক বুদ্ধি সম্পন্ন নারী।
কলকাতার
জানবাজারের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হলেন প্রীতিরাম দাস।
গরীব থেকে ধন কুবের হয়েছিলেন। তার হাত ধরেই
রানীকে রাসমণি হতে দেখা যায়। পলাশী যুদ্ধের
চার বছর আগে ১৭৫৩ সালে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জানবাজারের
প্রভাবশালী মানুষে পরিণত হন। ১৪ বছর বয়সে পিতা মারা গেলেন
কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। তিনি উদ্যোগী
পুরুষ। উদ্যোগী পুরুষের লক্ষী ও সরস্বতী
দুইই লাভ হয়।
জানবাজারের
জমিদার মান্না বাবুর আশ্রয় নিয়ে তাকে তার
ফিরিয়ে তাকাতে হয়নি। ইংরেজির কলকাতায় দালালির কাজ নিয়ে
ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে রসদ সংগ্রহের কাজ নেন। ফোর্টের এক
পদস্থ কর্মচারীর সুনজরে পড়ে ঢাকার নাটোর রাজদরবারে
উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হন। প্রচুর টাকা রোজগার করে ১৭৭৭
সালে কলকাতায় ফিরে আসেন। চব্বিশ বছর বয়সে মান্না পরিবারের যুগল মান্নার ১১ বছরের
মেয়েকে বিয়ে করেন। জানবাজারের কয়েকটা বাড়ি ও ষোল
বিঘা জমি যৌতুক হিসেবে পান।
১৭৮৭
সালে বার্ন কোম্পানির মৎসুদ্দি হন। ১৮০০ সালে
দেওয়ান শিবরাম স্যান্যালের সহায়তায়
নাটোরের মকিমপুর পরগনাকে নিলামে কিনে নেন। ছোট
ভাই কালীপ্রসাদকে এই পরগনার নায়েবে নিযুক্ত করে বাঁশ, কাঠ,
মাছের চালান দিতে থাকেন। বেলেঘাটায়
লবণের আরত খুললেন। খুব শিগগিরই কলকাতার এক নম্বর বড়লোকের পরিবারে পরিণত হন।
এদিকে দুই পুত্র হরচন্দ্র ও রাজচন্দ্রকে যুগানুসারী
লেখাপড়া শেখালেন। ছেলেদের বিবাহ দিলেন। কিন্তু বড় ছেলে
সুখ প্রাচুর্য বেশিদিন ভোগ করতে পারলেন না।
নিঃসন্তান স্ত্রীকে রেখে মারা গেলেন। কিন্তু বছর না ফিরতেই দ্বিতিয়
স্ত্রী মারা যায়। তৃতীয়পক্ষের স্ত্রী হয়ে আসেন রানী
রাসমণি। মহাসমারহে
১৮০৪ সালে রাজচন্দ্রের সঙ্গে রানী রাসমনির বিয়ে হয়।
প্রীতিরামের জীবদ্দশায় রাজচন্দ্র রাসমনির দুটি কন্যা হয়। পদ্মমণি ও কুমারী।
১৮১৩
সালে পারিবারিক আবাস নির্মাণ করেন। ১৮১৭ সালে ৬৪
বছর বয়সে মারা যান। প্রীতিরামের সুযোগ্য পুত্র রাজচন্দ্র।
রাসমনির স্বামী আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত। আধুনিক
মনোভাবাপন্ন, কুসংস্কার মুক্ত উদার প্রকৃতির যুবক।
পিতার ব্যবসা ও সম্পত্তির হাল ধরলেন। ইংল্যান্ডে কলভি কোম্পানিকে তিনি এজেন্ট
করে এদেশ থেকে তাসবির, চাদর,
মৃগনাভি, আফিং, নীল
প্রভৃতি রপ্তানি করতে লাগলেন। প্রখর ব্যবসা
বুদ্ধিসম্পন্ন রাজচন্দ্র নিলামের
আফিং ২৫ হাজার টাকায় ৭৫ হাজার বিক্রি করে একদিনে ৫০ হাজার টাকা
লাভ করে করেন।
রাসমণি
তৃতীয় কন্যা করুণাময়ীকে জন্ম দিলেন। বড় মেয়ের
বিবাহ দিলেন। ১৮১৯ সালে মৃত পুত্র সন্তানের জন্ম
দিয়ে শোকাহত হলেও ভেঙ্গে পড়েননি। চার বছর পর জন্ম দিলেন কনিষ্ঠ কন্যা জগদম্বা।
তবে
১৮৩১ সালে স্বামী মথুরামোহন বিশ্বাস ও একমাত্র পুত্র গোপালচন্দ্রকে রেখে তৃতীয়
কন্যা করুণাময়ী পরলোক গমন করে। ১৮৩৩ সালের
রাজচন্দ্র নব্য বাংলার আলোক প্রাপ্ত চরিত্র।
শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের একনিষ্ঠ ভক্ত। প্রচুর দান ধ্যানও
করতেন। ১০-১২ জন ছাত্রর সমস্ত খরচ চালাতেন।
গঙ্গার বাবুঘাট নির্মাণ করেছেন। ঘাটে যাওয়ার
সুন্দর রাস্তা, বেলেঘাটার খাল, আহীরিটোলার
ঘাট তৈরি করেন। এইসব জনহিত
কাজের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮৩৩ সালে রাজচন্দ্রকে
‘রায়’ উপাধি দিলেন। এই
ব্রতধারী সমাজসেবী মানুষটি ১৮৩৬ সালে মারা যান।
রাজচন্দ্রের
মৃত্যু পরিবারের হাল ধরতে প্রকাশিত হলেন রানী রাসমণি। তাঁর ব্যক্তিত্বে
শুধু জানবাজারে নয় সমগ্র বঙ্গে শুরু হলো
রাসমণি যুগ। সেই কালে স্বামীর পারলৌকিক শ্রাদ্ধে খরচ
করলেন ৫৫ হাজার টাকা। তারপর বিপুল সম্পত্তির দায়িত্ব নিলেন।
দুষ্টু জমিদার, অত্যাচারি নীলকর,
চোর-ডাকাত খুনি অন্যদিকে বন্যা,
মহামারী, দুর্ভিক্ষেও
রাসমণি অটল ছিলেন।
স্বামীর
বন্ধু দ্বারকানাথকেও কৌশলী উত্তর দিয়ে দুই লক্ষ টাকা
ঋণের বদলে স্বরুপপুর পরগনা নিজের করে নিইয়েছিলেন। সেই
সময় স্বরূপপুর পরগনার বার্ষিক আয়ছিল
ছত্রিশ হাজার টাকা। অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে দ্বারকানাথকে
ম্যানেজার পদে নিয়োগ করতে অস্বীকার করেন।
সেকালে
জমিদারদের তেমন সুনাম ছিল না। নড়াইলের
জমিদার রামরতন রায় রানীর জগন্নাথপুর তালুকে গ্রাস করার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
রানীর নিয়োজিত মহাবীর সর্দারকেও হত্যা করে। মহাবীরের হত্যায় প্রতিশোধের জন্য
চব্বিশ পরগনা, বর্ধমান, হুগলী
ও অন্যান্য জায়গা থেকে যোদ্ধা এনে শায়েস্তা করার
পরিকল্পনা করেন। রামরতন আদালতে মামলা করলে হেরে যায়।
অন্যদিকে অত্যাচারী নীলকর ডোনাল্ডকে
পিটিয়ে আধমোড়া করে দেন।
লেখকের মতে বঙ্গের নীল বিদ্রোহ তার হাতেই সূচনা হয়।
গঙ্গার
জেলেদেরও তিনি সহায়তা করেছিলেন। সরকারের কাছে গঙ্গা লিজ নিয়ে লোহার শিকলে
বেঁধে দিয়েছেন। ইংরেজরা অবশেষে জলকর বন্ধ করতে বাধ্য
হয়েছেন। এই ভাবে সারা বাংলায় রানীর নামে ধন্য
ধন্য পড়ে যায়।
অন্যদিকে
দুর্গাপূজার সপ্তমীতে সাহেবের সঙ্গে বিরোধ বাধে তাতেও রানী পিছুপা হয়নি। জানবাজার
থেকে বাবুঘাট পর্যন্ত আটকালে মামলা হয়। ভোরবেলা গোলমাল
শুরু হয়েছে বলে ৫০ টাকা জরিমানা করে। এই জরিমানা
তোলার জন্য সারা রাস্তা গরাণ গাছের গুড়ি
দিয়ে বেড়া দিয়ে দেয়।
অবশেষে জরিমানা ফেরত দিতে বাধ্য হয়।
১৮৫৭
সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময়ও রানিমা ভবিষ্যৎ দ্রষ্টার পরিচয়।
১৮৫৭ সালের ২৯ মার্চ ব্যারাকপুরের ক্যান্টনমেন্ট সিপাহী মঙ্গল পান্ডের বিদ্রোহ
সারা ভারতে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ক্ষতির
সম্ভাবনা দেখে অনেকেই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিল। কিন্তু রানী জানেন ইংরেজ
যাওয়ার নয়। ১৮৫৮ সালে রানী ভিক্টোরিয়া ভারতবর্ষের
শাসনভার গ্রহণ করলো।
রানীমার
সব কাজের মধ্যে সেরা কাজ হল দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দির।
জামাতা মথুরামোহনকে স্থান নির্বাচনের দায়িত্ব অর্পণ করলেন। জমি
নির্বাচিত হয় দক্ষিণেশ্বরে ভাগীরথী তীরে।
১৮৪৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, সাড়ে ৫৪ বিঘা
জমি নেওয়া হল ৪২ হাজার ৫০০ টাকায়।
জমিটি কুর্মপৃষ্ঠাকৃতির। শাস্ত্রমতে
শক্তি মন্দির প্রতিষ্ঠার সর্বোত্তম
স্থান। নির্মাণের দায়িত্ব ছিল বিলাতি
ঠিকাদার ম্যাকিনটস এ্যান্ড বার্ন। নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৮৫৪ সালে। শাস্ত্রমতে
প্রতিষ্ঠা হল ১৮৫৫ সালের ৩১ মে।
শেষ
মুহূর্তে পন্ডিত রামকুমার চট্টোপাধ্যায় দেবীকে অন্নভোগ
দিলেন। রানী রাসমণি মহানন্দে ও পরমোৎসাহে
অন্নদাযজ্ঞ করলেন। এই
মন্দির সংলগ্ন উদ্যানের পঞ্চবটিতে শ্রীরামকৃষ্ণের
আহবানে আসেন বিবেকানন্দ। যার হাত ধরে
বিশ্বের দরবারে ভারতবর্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়। রানী মাতার
অন্যতম জীবনীকার শ্রদ্ধেয় বঙ্কিমচন্দ্র সিং লিখেছেন – “দক্ষিণেশ্বর
নিত্য তীর্থ, ব্যক্ত তীর্থ,
শুধু ভারতের নয়, জগতের মহাতীর্থে
পরিণত হয়েছে। লোকমাতা শ্রী শ্রী রানী রাসমণি ও শ্রীরামকৃষ্ণদেবের আবির্ভাব
যুগান্তকারী ব্যাপার।
দক্ষিণেশ্বরের শ্রীমন্দিরে উভয়েই দিব্য লীলার
মাধুর্য প্রকট করিলেন …
ঠাকুর বলিতেন রাণীমা বিশ্ব জননী জগদম্বা। ধরাধামে তাঁহার
লীলা বিস্তার করিবার জন্য আসিয়াছিলেন”।
No comments