প্রত্যহের ভাড় - বুদ্ধদেব বসু,
তিনি
কবি। তাই কবির কাছে কাব্যবাণী পাখির মতো উড়ে আসে। তিনি ছন্দ দিয়ে সেই কাব্যের
আশ্রয় তথা নীড় তৈরি করেন। কাব্যকে তিনি অভ্যর্থনা জানান। সেখানে
জীবনটাকেই (তা নিজের বা মানুষের) বৃক্ষ বলছেন, যেখানে কাব্যের এই নীড় তৈরি হচ্ছে। উড়তে উড়তে পাখি যেমন উড়া থামিয়ে
নীড়ে আশ্রয় নেয়। কখনও বেগচ্যূত বা ব্যর্থ হয়না। তাই কবি সম্ভবত বেগচ্যুত
লিখেছেন। পাখার থেকে যে বায়ুর কম্পন বেরোয় তা যেন ব্যর্থ না
হয়। মানে সেই পাখির ভাষার আবেদন যে পৃথিবী ময় ছড়ায়... ভাষাকে যে ছন্দের বাঁধন
দিচ্ছেন বা ছন্দ দিয়ে বাঁধছেন, মানে কবি কবিতা লিখছেন তা যে
বছরে বছরে অবিরত থাকে। ভাগ্যের বিড়ম্বনাতেও যেন থাকে। আর যদি লিখতে লিখতে বলতে
বলতে ভাবতে ভাবতে ক্লান্তি আসে, মনের শান্তি যায়, বুকে যদি হতাশা ভার হয়ে আসে, আর
মৃত্যুর ক্ষণ চেপে আসে---তবু সেইসব ক্ষণেও যেন একই কাজ করে যেতে পারেন। মানে লিখে
যেতে পারেন। --তবুও মনের চরম---চিহ্ন... ।
বাণীর আত্মারে জেনেছি আপন সত্তা বলে---আসলে তাঁর কাব্যবাণীতে
প্রাণ কবিই যোগান... যে মূহুর্তে সে বাণীরূপ পাখি কবির ছন্দনীড়ে আশ্রয় নিল, মানে কবিতাটি লেখা হলো---সেই মুহুর্তে কাল
থেমে গেল। সে কবিতা কালের বিচারে বাঁচল কি মরল---তাতে কীই বা যায় আসে...
No comments