Header Ads

Header ADS

কালকেতুর ভোজনঃ মুকুন্দ চক্রবর্তী

 

কালকেতুর ভোজন

মুকুন্দ চক্রবর্তী

 

পাঠ্যপুস্তক এর প্রশ্নোত্তর                                                       প্রশ্নের মান-১

ক) ‘কালকেতুর ভোজন পাঠটি কোন কাব্যের অন্তর্গত?

উত্তরঃ ‘কালকেতুর ভোজন মুকুন্দ চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গল কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত

খ) ‘কালকেতুর ভোজন পাঠটির কবি কে?

উত্তরঃ ‘কালকেতুর ভোজন পাঠটির কবি কবিকঙ্কন মুকুন্দ চক্রবর্তী

গ) “মোচড়িয়া গোঁফ দুটা বান্ধিলেন ঘাড়ে”-এখানে কে গোঁফ দুটো ঘাড়ে বেঁধেছিল?

উত্তরঃ এখানে বীর কালকেতু নিজের ঘাড়ে গোঁফদুটিকে বেঁধেছিলেন

ঘ) এক শ্বাসে কালকেতু কয় হাঁড়ি ‘আমানি’ শেষ করে?

উত্তরঃ এক শ্বাসে কালকেতু সাত হাঁড়ি ‘আমানি’ শেষ করে

ঙ) ফুল্লরা কে?

উত্তরঃ ‘


চন্ডীমঙ্গল
কাব্যের অন্যতম নারী চরিত্র হল ফুল্লরা। সে ব্যাধ কালকেতুর স্ত্রী। সঞ্জয় কেতুর কন্যা।

 

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ                                                             প্রশ্নের মান-১

ক) মুকুন্দ চক্রবর্তীর পিতার নাম কী?

উত্তরঃ মুকুন্দ চক্রবর্তীর পিতার নাম হল হৃদয় মিশ্র।

খ) মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যের ওপর নাম কী?

উত্তরঃ মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যের ওপর নাম হল ‘অভয়া মঙ্গল’।

গ) মুকুন্দ চক্রবর্তী কোন রাজার পৃষ্টপোশকতা লাভ করেন?

উত্তরঃ মুকুন্দ চক্রবর্তী মেদিনিপুরের জমিদার বাঁকুড়া রায় ও তাঁর পুত্র রঘুনাথ রায়ের পৃষ্টপোশকতা লাভ করেন।

ঘ) মুকুন্দ চক্রবর্তী ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যটি কবে রচনা করেন?

উত্তরঃ মুকুন্দ চক্রবর্তী ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যটি আনুমানিক  রচনা করেন ১৫৯০-৯১ খৃষ্টাব্দে রচনা করেন।

ঙ) ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যটি কয় ভাগে বিভক্ত? 

উত্তরঃ ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যটি তিনটি খণ্ডে বিভক্ত। যথাঃ দেবখণ্ড, আখেটিক বা ব্যাধ খণ্ড এবং বনিক খণ্ড।

চ) দূর থেকে ফুল্লরা কার সাড়া পেল?

উত্তরঃ দূর থেকে ফুল্লরা বীর কালকেতুর সাড়া পেল।

ছ) কিসে ব্যঞ্জন খেতে দিয়েছিল?

উত্তরঃ নূতন খাপরায় ব্যঞ্জন খেতে দিয়েছিল।

জ) মহাবীর কয় হাঁড়ি খুদ-জাউ খায়?

উত্তরঃ মহাবীর চার হাঁড়ি খুদ-জাউ খায়।

ঝ) অম্বল খেয়ে বীর বনিতাকে কী পুছে? ‘বনিতা’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ অম্বল খেয়ে বীর বনিতাকে পুছে, “রন্ধন কর‍্যাছ ভালো আর কিছু আছে”।   ‘বনিতা’ শব্দের অর্থ হল স্ত্রী।

ঞ) কী খেয়ে বীর মুখ শোধন করে?

উত্তরঃ হরিতকি খেয়ে বীর মুখ শোধন করে।

ট) অভয়া কে?

উত্তরঃ অভয়া বলতে দেবী চণ্ডীকে বলা হয়েছে।

 _________________________________________________________

ঠ) শূন্যস্থান পূরণ কর—                                                                 প্রশ্নের মান-১

১। সম্ভ্রমে বসিতে দিল ____________ ____________।

উত্তরঃ হরিণের ছড়া।

২। সম্ভ্রমে ফুল্লরা পাতে _____________  ______________।

উত্তরঃ মাটিয়া পাথরা।

৩। __________ হইল বীর করিলা শয়ন।

উত্তরঃ নিশাকাল।

৪। _______ চরণে মজুক নিজ চিত।

উত্তরঃ অভয়ার।

৫। শ্রীকবিকঙ্কন গান ____________ সঙ্গীত।

উত্তরঃ মধুর।

____________________________________________________________

শব্দের অর্থ লেখঃ-                                                                         প্রশ্নের মান-১

বেঞ্জনঃ তরকারি। আমানিঃ পান্তা ভাত। বনিতাঃ স্ত্রী। কৌতুকঃ আগ্রহ। মরাইরঃ ধান্যাধারের। চিতঃ মন। নিবেদিলঃ নিবেদন করল। বড়ঃ বেনি বা খড়ের তৈরি মোটা দড়ি। চরণঃ পা। স্থলঃ জায়গা বা স্থান।

____________________________________________________________

২। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ-                                          প্রশ্নের মান-  ২/৩

ক) “দূর হতে ফুল্লরা বীরের পাল্য সাড়া”- এখানে বীর বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? এবং বীরের সাড়া পেয়ে ফুল্লরা কি করেছিল?

উত্তরঃ এখানে বীর বলতে কালকেতুকে বোঝানো হয়েছে বীর কালকেতুর সাড়া পেয়ে তার স্ত্রী ফুল্লরা সসম্মানে হরিণের ছাল পেতে দিয়েছে নারকেলের মালা জল ভরে দিয়ে ভোজনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে

খ) ‘ন্যাছি হরিণী দিয়া দধি এক হাঁড়ি’- কে হরিণী দিয়ে দধি এনেছে? আর সেই দধির ব্যবহার কিভাবে হয়েছিল? 

উত্তরঃ বীর কালকেতুর স্ত্রী ফুল্লরা হরিণের মাংসের বিনিময় কালকেতুর জন্য এক হাঁড়ি দধি এনেছে। কালকেতু সেই ক হাঁড়ি দধি দিয়ে তিন হাড়ি অন্ন খেয়েছিল

গ) তেয়াটিয়া তাল বলতে কী বোঝ? তেয়াটিয়া তালের সঙ্গে কালকেতুর কি সম্পর্ক?

উত্তরঃ তেয়াটিয়া তাল বলতে তিন আঁটিযক্ত তালের কথা বলা হয়েছে।

বীর কালকেতু ভোজনের সময় বড় বড় গ্রাস তোলে। একেকটি গ্রাস যেন তিন আঁটিযুক্ত তালের মতো বড়ো। বিশালাকার গ্রাসকে এখানে তিনাটি আঁটিযুক্ত তালের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে

 ঘ) ‘রন্ধন কর‍্যাছ ভালো আর কিছু আছে’- এখানে কার রান্নার কথা বলা হয়েছে? সে কালকেতুর জন্য কি কি ব্যঞ্জন তৈরি করেছিল?

উত্তরঃ এখানে বীর কালকেতুর স্ত্রী ফুল্লরার রান্নার কথা বলা হয়েছে

কালকেতুর ভোজনের জন্য আমানি, খুদ-জাঊ, লাউ দিয়ে মসুর ডালের স্যুপ, আলু ওল পোড়া এবং কচুর সঙ্গে করঞ্জা ও আমড়ার অম্বল তৈরি করেছিল। এছাড়া হরিণী মাংসের বদলে এক হাড়ি দধির ব্যবস্থা করেছিল

___________________________________________________________

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ                                                             প্রশ্নের মান- ৪/৫

ক) ‘কালকেতুর ভোজন কবিতাটি অবলম্বনে কালকেতুর ভোজন এর দৃশ্য বর্ণনা করো

উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের ঔপন্যাসিকদের অগ্রদূত মুকুন্দরাম চক্রবর্তী তিনি ছিলেন অসাধারণ পর্যবেক্ষণ শক্তির অধিকারী। ‘কালকেতুর ভোজন কবিতাটিতে কবি মধ্যযুগের বাঙ্গালী সমাজের গার্হস্থ্য জীবনের একটি বাস্তব চিত্রের বর্ণনা দিয়েছেন। এবং কালকেতু ও ফুল্লরা চরিত্র চিত্রাঙ্কনে কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী চিত্রকরের ভূমিকা পালন করেছেন কালকেতুর শরীরের আকৃতি বন্য প্রকৃতির, শক্তি-সাহসিকতা, ভোজন-শয়ন ইত্যাদি বর্ণনায় মুকুন্দরাম তার আদিম চরিত্রটিকে যথাযথভাবে তুলে ধরেছেন

সমগ্র কাব্যাংশটিতে কালকেতুর ভোজনের বর্ণনা রয়েছে। শিকার শেষে কালকেতু বাড়িতে ভোজন করতে আসে স্ত্রী ফুল্লরা তার ভোজনের আয়োজন করে। বসার জন্য হরিণের ছাল  দেয় নারকেলের মালায় জল ঢেলে দেয়। নানা ধরনের ব্যঞ্জনের জন্য পাত্র সাজিয়ে দেয়। কালকেতু গোঁফদুটি ঘাড়ে বেঁধে পরম উৎসাহে খেতে বসে।

            সে একশ্বাসে সাত হাঁড়ি আমানি বা পান্তাভাত খেয়ে ফেলে। তারপর চার হাঁড়ি খুদ-জাউ এবং ছয় হাঁড়ি লাউ মিশ্রিত মুসুর ডালের সুপ খায়। সঙ্গে দুই তিন ঝুড়ি আলু-ওল পোড়া খায়। কচুর সঙ্গে করঞ্জা-আমড়ার টক খেয়ে স্ত্রীর রান্নার প্রশংসা করে আরো কিছু রয়েছে কিনা জানতে চায় ফুল্লরা জানায় যে, হরিণের মাংশের বিনিময়ে এক হাঁড়ি দই এনেছে। সেই এক হাড়ি দই দিয়ে কালকেতু আরও তিন হাঁড়ি অন্ন অনায়াসে খেয়ে ফেলে।

তার প্রত্যেকটি গ্রাস যেন তিন আঁটিযুক্ত তালের মত বড়। খুব অনায়াসে বিপুল পরিমান খাবার খেয়ে ফেলে আর খাওয়ার সময় সে গলা দিয়ে ঘর ঘর শব্দ করে। মনে হয় যেন কোন ধান্যাধারে খড়ের বেনি খোলার শব্দ করছে। তার ‘বিটকাল’ ভোজন শেষ করে কালকেতু আচমন করে। তারপর সে হরিতকী মুখে দিয়ে মুখ শুদ্ধ করে নেয়

ব্যাধ কালকেতুর বন্য প্রকৃতির সঙ্গে জীবনযাপনে যথেষ্ঠ মিল আছে। বন্য সরলতায় কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী বাস্তবধর্মী সরস কৌতুকরসের পরিচয় দেন। এই কারনে অনেকে মনে করেন এযুগে জন্মালে মুকুন্দরাম কাব্য না লিখে উপন্যাস লিখতেন।

No comments

Powered by Blogger.